প্রতিবাদী সাংবাদিককে গ্রেফতার করতে আস্ত একটা যাত্রীবিমান অপহরণ করার অভিযোগ পূর্ব ইউরোপের দেশ বেলারুশের বিরুদ্ধে। বিমানটিকে অবতরণ করানোর পর প্রতিবাদী রোমান প্রোতেশেভিচকে গ্রেফতার করে বেলারুশ প্রশাসন। রবিবার এই ঘটনায় ইউরোপের একাধিক দেশ কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এই ঘটনায় হতবাক বিশ্বের খ্যাতনামা বিমানসংস্থাগুলি।
গ্রিসের রাজধানী এথেন্স থেকে সাব-স্ক্যান্ডেনেভিয়ান রাষ্ট্র লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসগামী বিমানটিকে মিনক্স বিমানবন্দরে অবতরণ করতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ। রায়ানএয়ারের বিমানটিতে ১৭১ জন যাত্রী ছিলেন বলে জানিয়েছে বিমানসংস্থা। রবিবার বেলারুশের আকাশসীমা ছেড়ে বেরনোর ঠিক আগে মিগ-২৯ বিমান পাঠিয়ে বোয়িং ৭৩৭ বিমানটিকে মিনস্কের দিকে ঘুরতে বাধ্য করে বেলারুশের সরকার। প্রাথমিক ভাবে বিমানের পাইলটকে জানানো হয়, বিমানে বোমা রয়েছে বলে খবর মিলেছে। বিমানটিকে বেলারুশের রাজধানী মিনস্ক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে নির্দেশ দেওয়া যায়। কিন্তু দেখা যায় বিমান যেখানে রয়েছে সেখান থেকে ভিলনিয়াসের দূরত্ব অনেক কম। বিমানটি যাতে বেলারুশের আকাশসীমা থেকে বেরিয়ে যেতে না পারে সেজন্য মোতায়েন করা হয় মিগ ২৯ বিমান।
বিমানটি মিনস্কে অবতরণের পর গ্রেফতার করা হয় ২৬ বছর বয়সী রোমান প্রোতেশেভিচকে। শুরু হয় তল্লাশি। তল্লাশিতে বিমানে কোনও বোমা মেলেনি। প্রায় ৭ ঘণ্টা পর ভিলনিয়াসের পথে রওনা হয় বিমানটি। বেলারুশের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের তরফে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর নির্দেশে বিমানটিকে অবতরণ করানো হয়।
যাত্রীরা জানিয়েছেন, বিমানটিকে যে মিনস্কে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সেব্যাপারে কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি তাঁদের। বিমান অবতরণ করতেই রোমান প্রোতেশেভিচকে বিমান থেকে নেমে যেতে বাধ্য করা হয়। তখন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি। যাত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।
এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পশ্চিমি বিশ্ব। বেলারুশের এই আচরণকে ‘বিমান অপহরণ’ বলে মন্তব্য করেছে তারা। এই ঘটনার পর কী প্রতিক্রিয়া দেওয়া হবে তা ঠিক করতে বৈঠকে বসতে চলেছে পশ্চিমি দেশগুলি। ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী ডমিনিক রাব জানিয়েছেন, এই কাজের জন্য ‘গুরুতর ফল’ ভুগতে হবে বেলারুশকে।
১৯৯৪ সাল থেকে বেলারুশের ক্ষমতায় রয়েছেন আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো। গত বছর ফের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি করার অভিযোগ ওঠে। তার পর থেকে বিরোধীদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন নামিয়ে আনার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।