বেঙ্গালুরুতে নিজের মাকে খুন করে ট্রলিতে ভরে পুলিশ স্টেশনে পৌঁছলেন বাঙালি মহিলা। সম্প্রতি এমনই হাড়হিম করা ঘটনা সামনে এসেছে। এই ঘটনায় স্তম্ভিত তদন্তকারী পুলিশকর্মীরাও। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত মহিলার নাম সোনালি সেন, বয়স ৩৫ বছর। তিনি বিগত ৬ বছর ধরে বেঙ্গালুরুতে থাকেন। এর আগে ফিজিওথেরাপিস্ট হিসেবে কাজ করতেন। তবে বিগত দু'বছর ধরে তিনি বেকার। এহেন সোনালি তাঁর বৃদ্ধা মাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে, গলা টিপে খুন করেছেন। এরপর নিজের মায়ের দেহ একটি ট্রলিতে ভরে অটোতে করে নিজেই পুলিশ স্টেশনে পৌঁছে যান তিনি। সোনালি সেখানে আত্মসমর্পণ করেন। দেখা যায়, ট্রলিতে মায়ের মৃতদেহের সঙ্গে নিজের প্রয়াত বাবার ছবি রেখেছিলেন সোনালি। এই কাণ্ড দেখে হতচকিত হয়ে যান থানার কর্মরত পুলিশকর্মীরাও।
সোনালিকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে ঝামেলা হচ্ছিল তাঁর মায়ের। এই নিয়ে রোজদিন বাড়িতে অশান্তি লেগেই থাকত। এই আবহে একদিন নাকি বিষণ্ণ হয়ে সোনালির মা তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর আত্মহত্যা করতে ইচ্ছে করছে। এই পরিস্থিতিতে সোনালি নিজেই মাকে ২০টি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেন। পরে তাঁর গলা টিপে খুন করেন। মৃত বৃদ্ধার নাম বীভা পাল।
জেরায় পুলিশকে সোনালি জানান, রোজ রোজ মায়ের সঙ্গে শ্বশুর-শাশুড়ির এই ঝামেলা তিনি আর সহ্য করতে পারছিলেন না। এই আবহে নিজের মায়ের কাছে সোনালি শোনেন যে তিনি নাকি আত্মহত্যা করতে চান। এদিকে এই কথা হয়ত সেই মুহূর্তের অবসাদ থেকে বলে থাকতে পারেন বীভাদেবী। তবে এরপরই নিজের মাকে খুন করার পরিকল্পনা করে ফেলেন সোনালি। প্রথমে মায়ের খাবারে ২০টি ঘুমের ওষুধ মিলিয়ে খাওয়ান সোনালি। পরে এতগুলি ঘুমের ওষুধ খাওয়ার জেরে বীভাদেবীর পেটে ব্যথা শুরু হয়। এই আবহে নিজের মেয়েকে সে কথা জানান বীভাদেবী। পরে সোনালি তাঁর মাকে গলা টিপে খুন করেন।
এরপর বেঙ্গালুরুর মিকো লেআউটে নিজের বাড়ি থেকে একটি উবার অটো বুক করেন সোনালি। মায়ের মৃতদেহ ট্রলিতে ভরেন তিনি। নিজের প্রয়াত বাবার একটি ছবি মায়ের বুকের ওপর রেখে চেন বন্ধ করেন সোনালি। অটো এলে সেই ট্রলি নিয়ে তাতে উঠে পড়েন সোনালি। সেই অটো করে পুলিশ স্টেশনে পৌঁছান সোনালি। এরপর ট্রলি নিয়ে থানার ভেতরে ঢুকে পুলিশকে জানান যে তিনি নিজের মাকে খুন করেছেন।