শুধুমাত্র ইংরেজি নয়। আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অনুষ্ঠিত হতে চলা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মূল পর্যায়ের ব্যালট পেপারে আরও চারটি ভাষার ব্যবহার দেখতে পাওয়া যাবে।
এই চারটি ভাষার মধ্যে ভারতীয় ভাষাগুলির মধ্যে কেবলমাত্র বাংলা ভাষাকেই স্থান দেওয়া হয়েছে।
ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সময় একাধিক ভাষা ব্যবহারের এই সুবিধা পাবেন কেবলমাত্র নিউ ইয়র্কের বাসিন্দারা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই অঞ্চল চিরকালই তার সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের জন্য পরিচিত। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এখানে কাজের সন্ধানে এসে পাকাপাকিভাবে বসবাস করতে শুরু করে দেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, সর্বদা জেগে থাকা নিউ ইয়র্ক শহরে ২০০টিরও বেশি ভাষায় মানুষ কথা বলে! মঙ্গলবার এখানকার বাসিন্দারাও আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট বেছে নেওয়ার জন্য ভোট দেবেন।
নিউ ইয়র্ক শহরের নির্বাচনী পর্ষদের কার্যনির্বাহী নির্দেশক মাইকেল জে রায়ান এই প্রসঙ্গে জানান, ‘ইংরেজি ছাড়াও আরও চারটি ভাষার ব্যবহার করা আমাদের জন্য জরুরি ছিল। এই চারটি ভাষা হল - চাইনিজ, স্প্যানিশ, কোরিয়ান এবং বাংলা।’
টাইমস স্কোয়ারে সেলস এজেন্ট হিসাবে কাজ করেন শুভাশিস নামে এক ব্যক্তি। তিনি আদতে বাঙালি। শুভাশিস প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে খুব খুশি। তিনি জানান, তাঁর বাবা কুইন্সে থাকেন। ব্যালটে বাংলা ভাষার ব্যবহার থাকায় তাঁর খুবই সুবিধা হবে।
এই প্রসঙ্গে শুভাশিসের বক্তব্য হল, 'আমার মতো লোকজন ইংরেজি জানেন। কিন্তু, আমাদের কমিউনিটির অনেকেই মাতৃভাষা ব্যবহার করা পছন্দ করেন। একাধিক ভাষার ব্যবহার সেইসব মানুষের পক্ষে ভোট দান প্রক্রিয়াটি আরও সহজ করবে।'
পিটিআই সূত্রে খবর, নিউ ইয়র্কের ব্যালটে বাংলা ভাষার প্রয়োগ কোনও প্রতীক নয়। বরং, তা একেবারেই আইনি বাধ্যবাধকতা।
ওই শহরের নিয়ম নির্দেশিকা অনুসারে, বাংলাভাষী নাগরিকরা যাতে ভোটাভুটিতে অংশগ্রহণের পূর্ণ সুবিধা পান, সেটা নিশ্চিত করতেই সংশ্লিষ্ট ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলির ব্যালট পেপারে বাংলা ভাষা ব্যবহার করতে হয়।
বাংলা ভাষার এই ব্যবহারের আওতায় ভারতের বাঙালিদের পাশাপাশি বাংলাদেশের বাঙালিরাও অন্তর্ভুক্ত।
রায়ান জানিয়েছেন, একটি মামলার প্রেক্ষিতেই এমন পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, 'নিয়ম অনুসারে, সর্বাধিক জনসংখ্যার নিরিখে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে একটি এশীয় ভারতীয় ভাষা বেছে নিতে বলা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সমস্ত পক্ষের আলোচনার ভিত্তিতেই বাংলা ভাষা নির্বাচন করা হয়।'
স্থানীয় প্রশাসনের বক্তব্য, এর ফলে ওই এলাকায় বসবাসকারী সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালিরা অনায়াসেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।