বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা অতুল সুভাষের মর্মান্তিক আত্মহত্যার জেরে এখনও দেশজুড়ে ক্ষোভের আবহ অব্যাহত। তারই মধ্য়ে আরও একবার প্রায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল দক্ষিণের এই হাইটেক শহরে। অভিযোগ উঠছে, এবার গার্হস্থ্য হিংসার শিকার যে পুরুষটি হয়েছেন বলে অভিযোগ, তিনি নিজেই আইনের রক্ষক!
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, শনিবার এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আনে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। তাদের তরফে জানানো হয়, আত্মঘাতী ওই যুবক বেঙ্গালুরু পুলিশে কনস্টেবল পদে নিযুক্ত ছিলেন। তাঁর নাম - থিপ্পান্না।
পুলিশের পোশাক পরেই আত্মঘাতী হন তিনি। নিজের মৃত্যুর জন্য ওই যুবক স্ত্রী ও শ্বশুরকে দায়ী করে গিয়েছেন বলে দাবি পুলিশ সূত্রের।
এখনও পর্যন্ত ঘটনা প্রসঙ্গে যেটুকু তথ্য সামনে এসেছে, তা হল - শুক্রবার রাতে রেললাইনে শুয়ে আত্মহত্যা করেন ওই পুলিশ কনস্টেবল। ঘটনাটি ঘটে শহরের হীলালিগে রেল স্টেশন এবং কারমেলারম হাসাগুরু রেল গেটের মাঝামাঝি একটি জায়গায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই নিহত কনস্টেবলের দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঘটনায় নিয়ম মাফিক মামলা রুজু করেছে বাইয়াপ্পানাহাল্লি রেলওয়ে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
এক্ষেত্রে সবথেকে লক্ষ্যণীয় এবং উদ্বেগজনক বিষয় হল, পুলিশের দাবি - নিহত কনস্টেবল একটি সুইসাইড নোট লিখে রেখে গিয়েছেন। তাতে যে তথ্য রয়েছে, তাতে আরও একবার অতুল সুভাষের মর্মান্তিক মৃত্যুর স্মৃতি ভেসে আসছে। পুলিশের দাবি, ওই কনস্টেবল তাঁর সুইসাইড নোটে নিজের মৃত্যুর জন্য স্ত্রী ও শ্বশুরকে দায়ী করে গিয়েছেন।
থিপ্পান্না তাঁর সুইসাইড নোটে লিখেছেন, তাঁর স্ত্রী এবং শ্বশুর ইয়ামুনাপ্পা যেভাবে দিনের পর দিন তাঁর উপর অত্যাচার করে চলেছেন, তা তিনি আর সহ্য করতে পারছেন না। সেই কারণেই নিজের জীবন শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। নিজের সুইসাইড নোটে নিজেকে 'গভীরভাবে দুঃখিত' বলেও উল্লেখ করেছেন থিপ্পান্না। তাঁর দাবি, তাঁর শ্বশুর ইয়ামুনাপ্পা মাঝে-মাঝেই তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতেন।
থিপ্পান্না নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করেছেন, 'ডিসেম্বরের ১২ তারিখ ছিল। তিনি (শ্বশুর) আমাকে সন্ধে ৭টা ২৬ মিনিটে ফোন করেন। আমরা প্রায় ২৪ মিনিট ধরে কথা বলি। তিনি আমাকে হুমকি দেন।' সেই কথোপকথনের বিস্তারিত তথ্য নিজের সুইসাইড নোটে লিখে রেখে গিয়েছেন থিপ্পান্না।
তিনি আরও লিখেছেন, শ্বশুরমশাই ডেকে পাঠানোয় পরদিন সকালেই তাঁর কাছে যান থিপ্পান্না। অভিযোগ, সেই সময় থিপ্পান্নার শ্বশুর তাঁকে বলেন, তাঁর মরে যাওয়া উচিত। তাহলে তাঁর মেয়ে আরও ভালো থাকবেন! সেই সময় থিপ্পান্নাকে তাঁর শ্বশুর রীতিমতো হেনস্থা করেন বলেও অভিযোগ।