জোট করে তৃতীয়বার সরকার গড়তে সক্ষম হয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু দু’মাস সেই জোট চলার মধ্যেই এনডিএ’র অন্দরে ফাটল দেখা দিল। বিজেপির ডাকে আগামী ৩ অগস্ট যে পদযাত্রা ডাকা হয়েছে এবার সেখান থেকে নিজেদের সরিয়ে নিল জোটসঙ্গী জেডিএস। আর তার দায় সরাসরি বিজেপির উপরেই চাপিয়েছেন দলের সুপ্রিমো এইচ ডি কুমারস্বামী। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার পদত্যাগের দাবিতে এই পদযাত্রার ডাক দেওয়া হয়েছে। মহীশূর আরবান ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’র দুর্নীতির প্রতিবাদেই সাতদিন ব্যাপী পদযাত্রার ডাক দেওয়া হয়েছিল।
কর্ণাটকে কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়েছে বিজেপি–জেডিএস। মোদী মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন এইচডি কুমারস্বামী। কিন্তু রাজ্যে দু’দলের মধ্যে ঝগড়া চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। মাইসুরু আরবান ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’র (মুদা) বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগে নাম জড়ায় কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার স্ত্রী পার্বতীর। তারই প্রতিবাদে ৩ থেকে ১০ অগস্ট বেঙ্গালুরু থেকে মাইসুরু পর্যন্ত পদযাত্রার ডাক দিয়েছে বিজেপি। সেই পদযাত্রায় যোগ দেওয়ার জন্য তারা আমন্ত্রণ জানিয়েছিল জোটসঙ্গী জেডিএসকে। কিন্তু তা পত্রপাঠ খারিজ করে দেন কুমারস্বামী। কেন এমন করলেন? জবাবে কুমারস্বামী বলেন, ‘বিজেপি যদি আমাদের বিশ্বাসই না করে, তাহলে আমরা সমর্থন করব কেন?’
আরও পড়ুন: বাংলায় বিপুল বিনিয়োগ করতে চলেছে পিয়ারলেস গোষ্ঠী, বৃহৎ ক্যানসার হাসপাতাল গড়ে উঠছে
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে গিয়েছে। তবে এইচডি কুমারস্বামী পদযাত্রা সমর্থন না করা নিয়ে জানিয়েছেন, এই কর্মসূচির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে প্রীতম জে গৌড়াকে। যিনি হাসন বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক। কেন তাঁকে আমন্ত্রণ করা হল? এই প্রশ্ন তুলেছেন কুমারস্বামী বলে সূত্রের খবর। যদিও রাজ্য বিজেপির সভাপতি বিওয়াই বিজেন্দ্র বলেছেন, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী পরিকল্পনা অনুযায়ী পদযাত্রা হবে।’ তবে একসপ্তাহ ধরে এই পদযাত্রা চলবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান সবপক্ষই। রবিবার বিজেপি এবং জনতা দল সেকুলার এই পদযাত্রা নিয়ে বৈঠকে উপস্থিত ছিল। স্বয়ং কুমারস্বামী উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি বিজেপির। সেখানে কুমারস্বামীর বক্তব্য, ‘বেঙ্গালুরু থেকে মাইসুরু পর্যন্ত পদযাত্রা, যেখানে জনতা দল সেকুলার শক্তিশালী, সেখানে কেমন করে আমাদের অবহেলা করা হল এবং আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হল?’
এই প্রীতম গৌড়াকে নিয়ে বিস্তর সমস্যা রয়েছে কুমারস্বামীর। এই প্রীতম গৌড়া খতম করতে চেয়েছিল দেবেগৌড়া পরিবারকে। তার উপর কুমারস্বামীর ভাইপোর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ ওঠে। হাসান কেন্দ্রে হেরে যান প্রোজ্জ্বল রেভান্না। তাঁকে হারাতে পথে নামেন হাসানের বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক প্রীতম গৌড়া। তিনিই প্রোজ্জ্বলের যৌন হেনস্তার পেনড্রাইভ ছড়িয়ে দিয়েছিল বলে দাবি কুমারস্বামীর। তাই কুমারস্বামীর সাফ কথায়, ‘বিজেপির সিদ্ধান্তে আমি ব্যথিত। প্রীতম গৌড়া কে? তিনি দেবেগৌড়া পরিবারকে শেষ করতে চান। বিজেপি এখন এই কর্মসূচি নিয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতে বলছে আমাদের। আমি তাঁর পাশে বসব? এই সেই ব্যক্তি, যিনি পেনড্রাইভ বিলি করেছিলেন। সহ্যেরও একটা সীমা রয়েছে।’