একদিকে যখন ভারতের নানা প্রান্তের বাসিন্দাদের উপর হিন্দি ভাষা জোরজবরদস্তি চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে, তেমনই একটি আবহে সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হল বেঙ্গালুরুর একটি ভিডিয়ো।
সংশ্লিষ্ট ভিডিয়োটি দক্ষিণী রাজ্য কর্ণাটকের রাজধানী শহর বেঙ্গালুরুর কোনও একটি পেট্রল পাম্পের। সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, স্থানীয় দুই বাসিন্দা পরস্পরের সঙ্গে জোর তর্ক জুড়ে দিয়েছেন।
তাঁদের মধ্যে একজন (যিনি ভিডিয়োটি রেকর্ড করেছেন) কন্নড় এবং অন্যজন ১২ বছর ধরে বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা হলেও আদতে ভারতের অন্য কোনও রাজ্য থকে এসেছেন এবং তিনি কন্নড় ভাষা জানেন না। আর এটাই হল সংশ্লিষ্ট বাগবিতণ্ডার বিষয়।
স্থানীয় কন্নড় ব্যক্তি ভিন রাজ্য থেকে বেঙ্গালুরুতে বসবাস করতে আসা ওই ব্যক্তিকে প্রশ্ন করেন, ১২ বছর বেঙ্গালুরুতে থাকা সত্ত্বেও কেন তিনি স্থানীয় ভাষা শিখতে পারলেন না?
ওই কন্নড় ব্যক্তির অভিযোগ, রোজগারের প্রয়োজনে ভিন রাজ্য থেকে কর্ণাটকে এসে থাকতে শুরু করলেও, এমনকী ১২ বছর কেটে গেলেও যদি কেউ স্থানীয় ভাষা শেখার চেষ্টা না করেন, তাহলে বুঝতে হবে, তিনি স্থানীয় ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন।
যদিও ভিন রাজ্য থেকে আসা ব্যক্তিটি না মানতে নারাজ। তিনি বলেন, তাঁর কখনও কন্নড় ভাষা শেখার প্রয়োজনই হয়নি। তাই তিনি শেখেননি।
এর জবাবে কন্নড় ব্যক্তি আবারও বলেন, ভিনরাজ্য থেকে আসা মানুষটির আসলে কর্ণাটক, সেখানকার সংস্কৃতি এবং ভাষা সম্পর্কে কোনও শ্রদ্ধা নেই বলেই তিনি ১২ বছরেও কন্নড় শিখে উঠতে পারেননি।
উলটো দিকে, বাইরে থেকে আসা মানুষটি কন্নড় ব্যক্তিটির কাছে জানতে চান, তিনি হিন্দি জানেন কিনা? জবাবে কন্নড় ব্যক্তি বলেন, তিনি অবশ্যই হিন্দি জানেন। কারণ, তিনি ভারতীয় এবং হিন্দি একটি ভারতীয় ভাষা।
ওই কন্নড় ব্যক্তির যুক্তি, একইভাবে কর্ণাটকের মানুষও কন্নড় হওয়ার পাশাপাশি ভারতীয়। তাই অন্য রাজ্য থেকে কাজ করতে এসে কেউ যদি বহু বছর দক্ষিণের এই রাজ্যে কাটিয়ে দেন, তাহলে তাঁর অবশ্যই এই ভাষা শেখা উচিত।
একইসঙ্গে ওই ব্যক্তিকে জোর গলায় বলতে শোনা যায়, 'এটা বেঙ্গালুরু। মুম্বই বা গুজরাত নয়।'
এই ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। হাজার-হাজার মানুষ সেই ভিডিয়ো দেখেছেন, শেয়ার করেছেন এবং কমেন্ট করেছেন। তাতে নানা জনে নানা মন্তব্য করেছেন।
কারও মতে, ১২ বছর কোনও জায়গায় থাকার পর অবশ্যই সেখানকার আঞ্চলিক ভাষা শেখা উচিত। কেউ আবার স্থানীয় ভাষা শিখতে বলার জন্য ওই কন্নড় ব্যক্তি উপর খাপ্পা হয়ে গিয়েছেন।
কেউ কেউ আবার অত্যন্ত যুক্তি সহকারে গোটা বিষয়টি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন।