আবারও এক স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীকে নৃশংসভাবে খুনের অভিযোগ উঠল! এবারের ঘটনাস্থল বেঙ্গালুরু। অভিযোগ, নিহত যুবকের একাধিক বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল এবং তিনি একাধিক বেআইনি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেই কারণেই নাকি তাঁকে তাঁর স্ত্রী খুন করেন। এবং এই খুনে মেয়েকে সাহায্য করেন নিহত যুবকের শাশুড়ি!
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনা ঘটেছে গত সপ্তাহে। যদিও পুলিশের তরফ থেকে ঘটনা প্রকাশ্যে আনা হয় সোমবার (২৫ মার্চ, ২০২৫)। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় দুই অভিযুক্ত - অর্থাৎ - নিহত যুবকের স্ত্রী ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশের পেশ করা তথ্য অনুসারে, নিহত ওই ব্যবসায়ীর নাম লোকনাথ সিং। গত শনিবার (২২ মার্চ, ২০২৫) চিক্কাবানাবারা এলাকায় তাঁর দেহ আবিষ্কার করেন এলাকারই কিছু বাসিন্দা। তাঁরা দেখেন, একটি শুনশান জায়গায় একটি গাড়ি দাঁড় করানো রয়েছে। তার ভিতরেই লোকনাথের দেহ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপর পুলিশকে খবর দেওয়া হয় এবং ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।
উত্তর বেঙ্গালুরুর ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সইদুল অদভত জানান, 'গত শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ আপতকালীন ১১২ নম্বরে ফোন করে আমাদের এই ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়। আমাদের জানানো হয়, একটি গাড়ির ভিতর একটি দেহ দেখতে পাওয়া গিয়েছে। আমরা নিহত ব্যক্তির স্ত্রী ও শাশুড়িকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করেছি। ঘটনার তদন্ত চলছে।'
প্রাথমিকভাবে যে তথ্য উঠে এসেছে, সেই অনুসারে - প্রথমে লোকনাথের খাবারে ঘুমের ওষুধ মেশানো হয়। সেই খাবার খেয়ে তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়লে তাঁকে গাড়িতে বসিয়ে ওই শুনশান জায়গায় নিয়ে আসা হয়। তারপর সেখানেই কোনও ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাঁর গলা কেটে দেওয়া হয়। পুলিশের দাবি, নিহতের স্ত্রী ও শাশুড়িই এই কাজ পরিকল্পনা মাফিক ঘটিয়েছেন। খুনের পর তাঁরা ওই শুনশান জায়গাতেই লোকনাথের লাশ ও গাড়ি ফেলে চম্পট দেন।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বর্তমানে যিনি লোকনাথের স্ত্রী, তাঁর সঙ্গে প্রায় দু'বছরের প্রেম ছিল লোকনাথের। গত বছরের ডিসেম্বর মাসেই তাঁরা রেজিস্ট্রি করে বিয়ে সারেন। সেই রেজিস্ট্রি হয় কুনিগালে। কিন্তু, এই বিয়েতে নাকি পরিবারের বাকি সদস্যদের আপত্তি ছিল। তার কারণ - পাত্র ও পাত্রীর মধ্যে বয়সের ফারাক। এমনকী, তাঁরা যে বিয়ে করে ফেলেছেন, এটাও নাকি দুই পরিবারের বাকি সদস্যরা জানতেন না।
যদিও বিয়ের পরই লোকনাথ তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর বাবা-মায়ের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। অন্যদিকে, তাঁর স্ত্রীর পরিবার এই বিয়ের কথা জানতে পারে মাত্র দু'সপ্তাহ আগে।
পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, লক্ষ্যণীয়ভাবে ঠিক এই দু'সপ্তাহ আগেই নাকি লোকনাথের স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা তাঁর কথিত বিবাহ বহির্ভূত একাধিক সম্পর্ক ও বেআইনি ব্যবসার কথা জানতে পারেন!
লোকনাথের শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের দাবি, এই সমস্ত 'ঘটনা' জানাজানি হওয়ার পর থেকেই নাকি নবদম্পতির মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। তাঁরা নাকি বিবাহ বিচ্ছেদের কথাও ভাবছিলেন। আবারও এও দাবি করা হয় যে লোকনাথ নাকি তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের ভয় দেখাচ্ছিলেন। আর সেই কারণেই নাকি তাঁর স্ত্রী ও শাশুড়ি তাঁকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেন।
অন্যদিকে, পুলিশের হাতে এ খবরও এসেছে যে একটি প্রতারণার মামলায় যুক্ত সন্দেহে লোকনাথ বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল ক্রাইম ব্রাঞ্চের রাডারে ছিলেন।