দুই সাফাইকর্মীর মর্মান্তিক মৃত্যুর জেরে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে বেঙ্গালুরুর একটি প্রসিদ্ধ মিষ্টি প্রস্তুতকারী সংস্থাকে।
ডেকান হেরাল্ডে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ওই মিষ্টি প্রস্তুতকারী সংস্থার কারখানায় নিকাশিনালা ও চেম্বার পরিষ্কার করতে নেমে প্রাণ হারাতে হয় দুই যুবককে। উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট সংস্থার বেঙ্গালুরু শহরে মোট ১৮টি দোকান রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন অনুসারে, অভিযুক্ত মিষ্টি প্রস্তুতকারী সংস্থার নাম - আশা সুইট সেন্টার। শহরের ডোব্বাসপেটের কাছে সম্পূর্ণা শিল্প তালুকে এই সংস্থার একটি কারখানা রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সেই কারখানার নিকাশিনালা ও চেম্বার পরিষ্কার করতে নেমেছিলেন লিঙ্গরাজু এবং নবীন নামে দুই সাফাইকর্মী। তাঁদের দু'জনেরই বয়স ২৬ বছর। সেই কাজ করার সময়েই তাঁদের মৃত্যু হয়। প্রয়াত লিঙ্গরাজু এবং নবীন যথাক্রমে - টুমাকুড়ু এবং অনন্তপুরের বাসিন্দা ছিলেন।
এই ঘটনার পরই দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে বেঙ্গালুরু পুলিশ। এঁরা হলেন সন্তোষ এবং রমেশ। এঁদের মধ্যে সন্তোষ হলেন সংশ্লিষ্ট কারখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মী এবং রমেশ জেআরআর অ্যাকোয়া প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থার মালিক।
উল্লেখ্য, রমেশের সংস্থাই সংশ্লিষ্ট কারখানার নিকাশি সংক্রান্ত বিষয়গুলির দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে।
এছাড়াও, ময়ূর নামে আরও অভিযুক্তকে খুঁজছে বেঙ্গালুরু পুলিশ। জানা গিয়েছে, ময়ূর আদতে আশা সুইট সেন্টারের মালিক। জোড়া মৃত্যুর ঘটনায় যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে, তাতে অভিযুক্তদের তালিকায় দু'নম্বরে রয়েছে এই ময়ূরের নাম।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৫ নম্বর ধারা অনুসারে মামলা রুজু করা হয়েছে। তাছাড়া, ২০১৩ সালের আইন অনুসারে, এই ধরনের কাজে কোনও ব্যক্তিকে নিয়োগ করা নিষিদ্ধ। তাই, সেই সংক্রান্ত ধারাও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, মৃত দুই যুবকই জেআরআর অ্যাকোয়া প্রাইভেট লিমিটেডে কর্মরত ছিলেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট কারখানার নিকাশিনালা ও চেম্বার পরিষ্কারের কাজ করতে পাঠানো হয়।
পুলিশের অনুমান, নিকাশিনালার ভিতরে নামার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই দুর্গন্ধ, বিষাক্ত গ্যাস ও রাসায়নিকের প্রভাবে লিঙ্গরাজু ও নবীনের মৃত্যু হয়।
প্রসঙ্গত, এই ধরনের অপমৃত্যু ঠেকানোর জন্যই নিকাশিনালা বা তার সঙ্গে যুক্ত কোনও চেম্বারে কোনও মানুষকে নামিয়ে তা পরিষ্কার করানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
এই আইন অমান্য করলে দোষী ব্যক্তির সর্বাধিক ২ বছরের কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকা জরিমানা অথবা দুই-ই একত্রে হতে পারে।