সাম্প্রতিক সময়ে অনলাইন বা সাইবার প্রতারণা বেড়েই চলেছে। আর এর জন্য নিত্যনতুন পন্থা অবলম্বন করছে সাইবার প্রতারকরা। তাদের ফাঁদে পা দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খোয়াচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আর এবার সম্পূর্ণ নতুন পদ্ধতিতে একটি সাইবার জালিয়াতির ঘটনা সামনে এল। যেখানে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অফিসিয়াল ইন্টারেক্টিভ ভয়েস রেসপন্স (আইভিআর) সিস্টেম নকল করে একটি স্বয়ংক্রিয় ফোন কলের মাধ্যমে প্রতারণা করা হল। এভাবে ২ লক্ষ টাকা প্রতারণার শিকার হলেন বেঙ্গালুরুর একজন মহিলা।
আরও পড়ুন: প্রতারক নিয়োগ হত বারাসতে, তারাই করত ফোন, নম্বর কীভাবে পেত? পর্দাফাঁস করল পুলিশ
জানা গিয়েছে, ওই মহিলা ফোনে একটি আইভিআর কল পান। একটি অ্যাপের মাধ্যমে মহিলা দেখতে পান সেটি এসবিআই থেকে এসেছে। আগে থেকেই মহিলার ওই ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তাই মহিলা ভেবেছিলেন সত্যিই তাকে ওই ব্যাঙ্ক থেকে ফোন করা হয়েছে। তখন মহিলা কল রিসিভ করেন। আইভিআরের বার্তায় মহিলা জানতে পারেন তার অ্যাকাউন্ট থেকে ২ লক্ষ টাকা স্থানান্তর করা হচ্ছে। এটি বন্ধ করতে হলে নির্দিষ্ট সংখ্যা টিপতে বলা হয় মহিলাকে। যদিও তাতে মহিলার সন্দেহ হচ্ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত কলের নির্দেশ অনুসরণ করেন মহিলা।
স্থানান্তর অস্বীকার করার বিকল্পটি বেছে নেন। কিছুক্ষণ পরে কল শেষ হয়ে যায়। আর কল শেষ হতেই মহিলা মোবাইলে একটি মেসেজ পান। তাতে তিনি জানতে পারেন তার অ্যাকাউন্ট থেকে ২ লক্ষ টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে। তখন মহিলা প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে প্রথমে ব্যাঙ্কে ছুটে যান। সেখানে আধিকারিকরা তাকে সাইবার ক্রাইম সম্পর্কে নিশ্চিত করেন। এরপর হেল্পলাইন নম্বর ১৯৩০ এ জালিয়াতির অভিযোগ জানান ও পরে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তার ভিত্তিতে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি আইন এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩১৮ (প্রতারণা) ধারার অধীনে মামলা নথিভুক্ত করে।
সাইবার ক্রাইমের তদন্তকারীরা বলছেন, এই ধরনের প্রতারণা সচরাচর দেখা যায় না। একেবারে নতুন পদ্ধতিতে এই সাইবার প্রতারণা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে মহিলা নিজের কোনও প্রমাণপত্র বা কোনও তথ্য জানাননি। তা সত্ত্বেও কীভাবে তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা স্থানান্তর করা হল তাতে হতবাক তদন্তকারীরা। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, একজন পুলিশ অফিসার জানান, হয় এক্ষেত্রে মহিলা নিজের অজান্তেই মূল তথ্য জলিয়াতিদের প্রদান করেছেন অথবা জালিয়াতরা কোনওভাবে তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার জন্য নতুন কোনও কৌশল তৈরি করেছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।