ভারতের সকল রাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের পুলিশের জন্যে 'ভারতপোল' নামক অনলাইন প্ল্যাটফর্মের নকশা তৈরি করল সিবিআই। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সরাসরি ইন্টারপোলের থেকেই কোনও এক অপরাধীর তথ্য চাইতে পারবে রাজ্যের পুলিশ দফতরগুলি। উল্লেখ্য, ভারতে ইন্টারপোল সংক্রান্ত যাবতীয় তদন্ত এবং তথ্যের 'লিঙ্ক' হল এই সিবিআই। ইন্টারপোলের মাধ্যমে অন্য সদস্য দেশের তদন্তকারী সংস্থার থেকে তদন্তের স্বার্থে তথ্য চাইতে পারে সিবিআই। এর পাশাপাশি অন্য দেশকে সাহায্য করতে ইন্টারপোলের মাধ্যমেই তথ্য সরবরাহ করতে পারে সিবিআই। (আরও পড়ুন: ভারতে তৈরি ১১ ওষুধের আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আমেরিকার, কিন্তু কেন?)
এদিকে কোনও রাজ্যের পুলিশের যদি ইন্টারপোলের সাহায্যের দরকার পরে, তাহলে তাদের সিবিআইয়ের দ্বারস্থ হতে হয়। কোনও মামলার অভিযুক্ত যদি বিদেশে পালিয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে 'রেড কর্নার' নোটিশ জারির জন্যেও সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে সিবিআইয়ের দ্বারস্থ হতে হয়। এমনকী ইন্টারপোলের থেকে ইয়েলো নোটিশ (হারিয়ে যাওয়া মানুষের জন্য), ব্লু নোটিশ (কোনও এক ব্যক্তির কার্যকলাপ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য) জারির জন্যেও সেই রাজ্য পুলিশের ডিপার্টমেন্টকে আগে সিবিআইয়ের দ্বারস্থ হতে হয়। তারপর সিবিআই সেই রাজ্যের পুলিশ ডিপার্টমেন্টের সেই আবেদন ইন্টারপোলের কাছে জমা করে। এভাবে সিবিআইয়ের মাধ্যমে ইন্টারপোলের থেকে কোনও এক পলাকত অভিযুক্তের তথ্য চাইতে বা তাকে নিয়ে নোটিশ জারি করতে বলার এই প্রক্রিয়া রাজ্যগুলির জন্য সময়সাপেক্ষ হয়ে যাচ্ছে। তাই সেই জটিলতা কাটাতে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের ভাবনা সামনে এসেছিল। সেই মতোই 'ভারতপোল' তৈরি হচ্ছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ইন্টারপোল সংক্রান্ত রাজ্য পুলিশ ডিপার্টমেন্টগুলির যত আবেদন আছে, তার জন্যে নির্দিষ্ট একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরির পরিকল্পনা পেশ করা হয়েছিল সিবিআই ডিরেক্টর প্রবীণ সুদের কাছে। সেই মতোই এই 'ভারতপোল' তৈরি হয়েছে। সিবিআই অভ্যন্তরীণ ভাবে এই ভারতপোলের ট্রায়াল চালাচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, আগামী ৭ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই ভারতপোল ব্যবস্থার উদ্বোধন করবেন। এই আবহে সিবিআই এবং রাজ্য পুলিশের মধ্যে যোগাযোগ আরও অনেক দ্রুত হবে। আর ইমেল, ফ্যাক্সের ওপর এটি নির্ভর করবে না। সরাসরি একটি পোর্টালের মাধ্যমেই সব আবেদন এবং যোগাযোগ করা যাবে। এর ফলে প্রয়োজনীয় নোটিশ ইস্যু করার বিষয়টি আরও সহজতর হয়ে যাবে। প্রসঙ্গত, ২০২১ সাল থেকে ইন্টারপোলের সাহায্যে প্রায় ১০০ জন পলাতক অপরাধীকে ভারতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে ২০২৪ সালেই ২৬ জনকে ভিনদেশ থেকে ফেরত আনা হয়েছে ভারতে।