সন্দীপ দেওয়ান
ভারতের ছত্তিশগড়ের গরিয়াবন্দ জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১৯ মাওবাদী নিহত হয়েছে। এর মধ্যে নকশাল জয়রাম ওরফে চালাপাথিও রয়েছে যার মাথার দাম এক কোটি টাকা ছিল। নেত্র ২-এর সাহায্যে এই সাফল্য পেয়েছেন জওয়ানরা। নিরাপত্তারক্ষীরা প্রথমে ড্রোন অর্থাৎ তৃতীয় নয়নের সাহায্যে জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা নকশালদের শনাক্ত করেন এবং তারপর একে একে তাদের নিকেশ করেন। নকশাল বিরোধী অভিযানে ড্রোনকে প্রচুর ব্যবহার করা হচ্ছে। যে পাহাড়ে নকশালদের উপস্থিতি ছিল, সেখানে ৬টি ড্রোন উড়িয়েছিলেন বাহিনীর জওয়ানরা। এ কারণে তারা জঙ্গলের মাঝখানে লুকিয়ে থাকা নকশালদের গতিবিধি শনাক্ত করতে সক্ষম হয় এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। খবর লাইভ হিন্দুস্তান সূত্রে।
কেন্দ্রীয় সরকার নকশাল অধ্যুষিত এলাকায় মোতায়েন আধাসামরিক বাহিনীর প্রতিটি ব্যাটালিয়নকে দুটি করে ড্রোন ক্যামেরা দিয়েছে। ছত্তিশগড়ে নকশাল বিরোধী অভিযানে বড় ভূমিকা নিচ্ছে নেত্র ২ নামের এই মিনি ড্রোন। নকশালদের উপস্থিতির খবর পেয়ে আশপাশের এলাকা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করার পরেই ড্রোন ওড়াতে থাকেন জওয়ানরা। এর জেরে দারুণ সাফল্য পাচ্ছেন জওয়ানরাও। ২০২৫ সালে এখনও পর্যন্ত ছত্তিশগড়ে এনকাউন্টারে ৪৭ জন নকশাল নিহত হয়েছে। ২০২৪ সালে এনকাউন্টারে ২৪৭ জন নকশাল নিহত হয়েছিল। ২০২৪ সালের ৪ অক্টোবর ছত্তিশগড়ে সবচেয়ে বড় এনকাউন্টার হয়েছিল।
ছত্তিশগড়ের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় শর্মা জানিয়েছেন, দু'দিনের অভিযানে ১৯ জন নকশালকে খতম করা হয়েছে। বিশেষ বিষয় হল সিসি সদস্য জয়রাম ওরফে চালাপতিকেও হত্যা করা হয়েছে। ছত্তিশগড়ে নিহত ওড়িশা ক্যাডারের নকশাল ছিল সে। সিসি সদস্যের হত্যাকাণ্ড নকশাল অভিযানের ইতিহাসে প্রথম ঘটনা। তার মাথার ওপর এক কোটি টাকারও বেশি পুরস্কার ছিল। ছত্তিশগড়-ওড়িশা পুলিশ ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। তল্লাশি চালিয়ে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে ছত্তিশগড় থেকে নকশালবাদ নির্মূল করতে হবে। বাহিনীকে সব ধরনের প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। মাওবাদী কার্যকলাপের উপর নজরদারি চালাতেও ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে।
এনকাউন্টারে খতম ১৯ মাওবাদী, তৃতীয় বড় অভিযান
ছত্তিশগড়ে বস্তারের পর গড়িয়াবন্দ জেলায় নকশালদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এটি তৃতীয় বড় নকশাল অভিযান। এখানে নিরাপত্তা বাহিনী ৩৬ ঘণ্টায় ১৯ জনেরও বেশি নকশালকে হত্যা করেছে। পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ছত্তিশগড়-ওড়িশা সীমান্তে মইনপুর থানার কুলহারিঘাট জঙ্গলে এই এনকাউন্টার হয়। আহত হয়েছেন সিআরপিএফের কোবরা ব্যাটেলিয়নের এক জওয়ানও। বস্তারে বাহিনীর ক্রমবর্ধমান চাপের পর নকশালরা অন্য সীমান্ত এলাকায় সরে যাচ্ছে।
(প্রতিবেদন )