নীতিশ কুমার সরকারকে গদিচ্যুত করার মতো শক্তি ধরে না লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি-র নেতৃত্বাধীন জোট। এই কারণে বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে মহাজোট ছেড়ে বেরোনোর সিদ্ধান্ত নিলেন রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টি প্রধান তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উপেন্দ্র কুশওয়াহা।
মঙ্গলবার পটনায় তিনি জোট ত্যাগ করার ঘোষণা করে জানান, এবার নতুন রাজনৈতিক পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আরএলএসপি। আর সেই পথে চলার পথে সফরসঙ্গী হিসেবে মায়াবতীর নেতৃত্বাধীন বহুজন সমাজ পার্টির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছে তাঁর দল।
গত সপ্তাহে জোট ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে কুশওয়াহা জানিয়েছিলেন, তেজস্বী প্রসাদ যাদবকে নেতৃত্ব থেকে সরানোর বিষয়ে আরজেডি তার অবস্থান পরিবর্তন না করলে তাঁকে পুনরায় চিন্তাভাবনা করতে হবে।
তেজস্বীকে খোঁচা দিয়ে কুশওয়াহা প্রশ্ন তোলেন, যে দলের নেতা দশম শ্রেণিও পাশ করেননি, তাদের শাসনে রাজ্যে কী ভাবে শিক্ষার বিকাশ ঘটতে পারে? তিনি বলেন, ‘নীতিশ কুমারের মোকাবিলায় কোনও দিক দিয়েই তুলনা চলতে পারে না তেজস্বীর। এই কারণে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা তার পক্ষে কখনই সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে সরকার গঠনের লক্ষ্যে রাজ্যের ২৪৩টি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আরএলএসপি। দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের স্বার্থে রাজ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে চায় আরএলএসপি যাতে এক শিক্ষিত ও সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তোলা যায়।’
অন্য দিকে, পুরনো জোটসঙ্গী কুশওয়াহাকে ফেরাতে বিশেষ আগ্রহী নন নীতিশ কুমার। বিষয়টি তাই তিনি জোটসঙ্গী বিজেপির উপরেই ছেড়ে দিয়েছেন। তবে গেরুয়া শিবিরেও তাঁকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে খবর। এ দিকে, এইচএএম প্রধান বিশ্বস্ত জিতন রাম মানঝিকে জেডি(ইউ) এর সঙ্গী হিসেবে বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দিতে রাজি হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
নয়া জোট বিহারে সরকার গড়বে বলে প্রচার করলেও এলজেপি প্রধান চিরাগ পাসওয়ানের সঙ্গে তাঁর কোনও রকম আলোচনা হয়নি বলে দাবি করেছেন কুশওয়াহা। তবে এনডিএ জোটে গুরুত্ব না পেয়ে বহুদিন থেকেই যে পাসওয়ান ফুঁসছেন, তা বিহারের রাজনৈতিক মহল বিলক্ষণ জানে। সেই কারণে ফিলহাল তিনি নীতিশ কুমারের কড়া সমালোচনা শুরু করেছেন। বিশেষ করে পরিযায়ী শ্রমিক পরিস্থিতি যথাযথ সামলাতে পারেননি বলে নীতিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন পাসওয়ান।
আরজেডি শিবিরের দিকে তোপ দাগার পরে নীতিশ কুমারের বিরুদ্ধেও রাজ্যে শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও দুর্নীতি দমন নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচারে নেমেছেন কুশওয়াহা। নির্বাচনী প্রচারে তাঁর নতুন স্লোগান, ‘অব কি বার শিক্ষাওয়ালি সরকার।’