বিধানসভায় বিরোধী নেতা তেজস্বী যাদবের নিরন্তর ব্যক্তিগত আক্রমণে মেজাজ হারালেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। ওয়েলে নেমে পরস্পরের দিকে ধেয়ে যাওয়া দুই পক্ষের বিধায়কদের সামলাতে আসরে নামলেন মার্শালরা।
শুক্রবার বিহার বিধানসভার অধিবেশনে রাজ্যপালের ভাষণের পরে বিতর্কে অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে একের পর এক ব্যক্তিগত আক্রমণ শানাতে শুরু করেন বিরোধী দলনেতা তথা আরজেডি বিধায়ক তেজস্বী যাদব। অভিযোগের তালিকায় উঠে আসে ১৯৯১ সালের হত্যা মামলা, যাতে বেকসুর রেহাই পেয়েছেন নীতীশ। এ ছাড়া ‘সিএম’ নামে একটি বইয়ের অংশ বিশেষ ও শ্রীজন কেলেঙ্কারি নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধতে শুরুকরেন লালুপুত্র, যার জেরে ট্রেজারি বেঞ্চে অস্বস্তি শুরু হয়।
বিরোধী নেতার অভিযোগের পিছনে কোনও প্রমাণ নেই জানিয়ে অধ্যক্ষকে পালটা নালিশজানান সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বিজয় কুমার চৌধুরী। তিনি জানান, আদালতের রায়দান সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যুক্তিহীন অভিযোগ সাজাচ্ছেন তেজস্বী। তাঁকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন অদ্যক্ষ বিজয় কুমার সিনহা। কিন্তু তা গ্রাহ্য না করে ফের নীতীশের বিরুদ্ধে বলতে ওঠেন তেজস্বী।
এতেই সংযমের বাঁধ ভাঙে নীতীশের। ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলে ওঠেন, ‘ও অবাস্তব সব অভিযোগ করছে। সরাসরি মিথ্যে কথা বলছে। ভাইয়ের মতো এক বন্ধুর ছেলে হওয়ার কারণে এতক্ষণ চুপ করে ছিলাম। ভেবেছিলাম কথা না বললে হয়ত নিজেকে শুধরে নেবে।’
মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণের মাঝেই ওয়েলে নেমে পরস্পরের বিরুদ্ধে আক্রমণ হানতে শুরুকরেন শাসক ও বিরোধী গোষ্ঠীর বিধায়করা। পরিস্থিতি ক্রমে হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছলে আসরে নামেন মার্শালরা। তাঁদের হস্তক্ষেপে অপ্রীতিকর কিছু না ঘটলেও গন্ডগোলের জেরে অধিবেশন আধঘণ্টা মুলতুবি ঘোষণা করেন অধ্যক্ষ।
ও দিকে নীতীশ বলে চলেন, ‘আমিই ওর বাবাকে সংসদীয় দলনেতা বানিয়েছিলাম। এমনকি ও নিজেও আমার জন্যই উপ-মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিল, আর এখন এই সব বলতে ওর লজ্জাও করছে না। ওর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের ব্যাখ্যা চেয়েছিলাম, কিন্তু ও তা দিতে পারেনি। আমার সম্পর্কে আদালত কী রায় দিয়েছে, তা সকলেই জানে। তা সত্ত্বেও সেই পুরনো মিথ্যা অভিযোগ ও করে চলেছে। অনেক সহ্য করেছি, কিন্তু আর নয়।’
এ দিন গোড়া থেকেই রণং দেহী মূর্তিতে ছিলেন বিরোধীরা। বিধানসভার অধ্যক্ষ নির্বাচনের জন্য তাঁরা আবার দাবি তোলেন। সেই দাবিও খারিজ করে দেন অধ্যক্ষ।