বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার হলেন ভগবান ব্রহ্মা। লালুপ্রসাদ যাদবকে তিনি তৈরি করেছেন বলে নীতীশ যে দাবি করেছিলেন, তারই পাল্টা জবাব দিয়েছেন রাজ্যসভার সাংসদ তথা আরজেডি নেতা মনোজ ঝা। মঙ্গলবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের মধ্যে বিধানসভায় কথা কাটাকাটি হয়। নীতীশ তেজস্বীকে বলেন, 'তোমার বাবাকে (আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদব) রাজনীতিতে আমি তৈরি করেছি।'
বুধবার পাল্টা জবাবে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে মহাবিশ্বের স্রষ্টা বলে কটাক্ষ করেছেন আরজেডি সাংসদ মনোজ ঝা। তিনি বলেন, 'আমি এখন নীতীশ কুমারকে নিয়ে চিন্তিত। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে লালুপ্রসাদ সম্পর্কে তিনি এই ধরনের ভাষা ব্যবহার করছেন। একসময়, নীতীশ কুমার লালুপ্রসাদের দলে ছিলেন। তাঁকে লালুপ্রসাদ যাদবের কাছের লোক বলা হত।'
তাঁর কথায়, 'মঙ্গলবার তেজস্বী যাদব কোনওরকম তিক্ততা ছাড়াই বিধানসভায় বর্তমান সময়ের প্রতিকূলতা এবং ভবিষ্যতের রূপরেখা তুলে ধরেছেন। তিনি যুক্তির ভিত্তিতে সবকিছু ব্যাখ্যা করেছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার তার কোনও উত্তর দিতে পারেননি। নীতীশ কুমার তো মহাবিশ্বের স্রষ্টা, আপনি ব্রহ্মা। আজকাল যদি আপনার মনে এই ধরনের চিন্তা ভাবনা আসে, তাহলে আমি আপনার জন্য আরও বেশি চিন্তিত।
বিধনাসভায় মঙ্গলবার কথা কাটাকাটির মধ্যে জেডিইউ নেতা নীতীশ বিরোধী দলনেতা তেজস্বীকে বলেন, আগে বিহার কী ছিল? আজ তোমার বাবা যে জায়গায় রয়েছেন, তা আমার জন্য। আমি তাঁকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছি। এমনকী তোমার জাতের লোকেরাও আমাকে বলেছেন, আমি কেন এসব করছি। কিন্তু, আমি এখনও লালুপ্রসাদকে সমর্থন করি। অন্যদিকে, বিরোধী দলনেতা তেজস্বী ২০০৫ সালের আগে বিহারের পরিস্থিতি নিয়ে নীতীশের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি নীতীশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন, মুখ্যমন্ত্রী সবসময় অভিযোগ খণ্ডন করার জন্য কথা ঘুরিয়ে দেন এবং অতীতের সরকারে ব্যর্থতাকে তুলে ধরে প্রশাসনিক গাফিলতিকে কাঠগড়ায় তোলেন।
তেজস্বীর কথায়, 'সরকার যা লিখে দেয় রাজ্যপাল শুধু সেই ভাষণই পাঠ করেন। নতুন রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান বিহারের ইতিহাস নাই জানতে পারেন। আমাদের কাছে আগের রাজ্যপালের ভাষণও রয়েছে। আর এই দুটো ভাষণই প্রায় এক। চাকরি বা নিয়োগ নিয়ে সেই একই চর্বিত চর্বণ করা হয়েছে।'তিনি আরও বলেন, ২০০৫ সালের আগে নীতীশ কুমারের বয়স ৫৫ হয়ে গিয়েছিল। উনি ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে গিয়েছিলেন এবং কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীও ছিলেন। এই বিধানসভাও ২০০৫ সালের আগে ছিল। লালুজিকে অনেক মানুষই সমস্যায় থাকেন। যদি এই সরকার আরও ৪০ বছর ক্ষমতায় থাকে, তাহলেও ২০০৫ সালের আগের জমানাকে দোষ দিয়ে যাবে।