১৯৯৩ সালে মুম্বইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের প্রধান চক্রী দাউদ ইব্রাহিম আজও বহাল তবিয়তে রয়েছে পাকিস্তানের করাচিতে। তবে ইসলামাবাদ দাবি করে যে দাউদ তাদের দেশে নেই। দীর্ঘ তিনদশক এই ইস্যুতে মিথ্যে বলে আসছে পাকিস্তান। এই আবহে সম্প্রতি এসসিও বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিতে ভারতের গোয়ায় এসেছিলেন পাক বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। স্বভাবতই দাউদ সংক্রান্ত প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় তাঁকে। এই আবহে বিলাওয়াল কী বললেন? পাকিস্তান কি আদৌ কোনওদিন দাউদকে ভারতের হাতে তুলে দেবে?
সাংহাই কো-অপারেশন অর্গনাইজেশনের বৈঠকে যোগ দিতে দু'দিন আগে ভারতে এসেছিলেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো। ভারতে থাকাকালীন তাঁকে নানা কঠিন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। সীমান্তে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করার নীতি নিয়ে অনেক প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। পাশাপাশি দাউদ ইব্রাহিম সম্পর্কিত প্রশ্নেরও মুখোমুখি হতে হয়েছিল বিলাওয়ালকে। তবে বিলাওয়ালের জবাবে ফের একবার সামনে এল পাকিস্তানের দ্বিচারিতা। দাউদ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বিলাওয়াল প্রেক্ষাপটের বাইরে গিয়ে বলেন, '২০১৯ সালের ৫ অগস্ট ভারত যখন আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘন করল তখনই দুদেশের শান্তি প্রক্রিয়া হিমঘরে চলে গিয়েছে।'
উল্লেখ্য, এই দাউদের মাথার দাম ২৫ মিলিয়ন ডলার। ২০০৩ সালে রাষ্ট্রসংঘ এই দাম ধার্য করেছিল। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদীদের তালিকায় আজও শীর্ষ স্থানে রয়েছে দাউদ। সেই ডনকেই তিনদশক ধরে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে পাকিস্তান। দাউদ ছাড়াও ভারতের 'মোস্ট ওয়ান্টেড' তালিকায় থাকা লস্কর-ই-তৈবা প্রধান হাফিজ সইদ, জৈশ-ই-মহম্মদ প্রধান মৌলানা মাসুদ আজাহার, হিজবুল মুজাহিদিনের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ সালাউদ্দিন পাকিস্তানের আশ্রয় রয়েছে।
এদিকে নাম না করে এসসিও-র মঞ্চে বিলাওয়ালকে 'সন্ত্রাসের প্রোমোটার' আখ্যা দিয়ে তোপ দাগেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। পাকিস্তানে ফিরে গিয়ে তা নিয়েও মুখ খোলেন বিলাওয়াল। তিনি বলেন, 'তিনি যা বলেছেন, তা তাঁর ইচ্ছে। আমি সেখানে গিয়ে আমার বক্তব্য পেশ করেছি। প্রেসের সঙ্গে কথা বলেছি এবং এর সবকিছুরই রেকর্ডে আছে। মিথ্যা অপপ্রচারের কারণে নিরাপত্তাহীনতা রয়েছে। আমি কিছু না বললেও সেখানে গিয়ে আমি আমার ইস্যু উপস্থাপন করেছি। তাতে করে এই অপপ্রচার বন্ধ হবে। এটা শুধু ভারতের প্রেক্ষাপটে নয়। যারা পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত করছে তাদের সবারই উদ্দেশে বলা।' তিনি আরও বলেন, 'তিনি বলেন, যারা সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে এবং যারা অপরাধী, তারা একসঙ্গে বসতে পারেন না। এটা ঘৃণা। আমি কি আমার রাজনৈতিক ইতিহাসে একবারও ভুলবশত একজন সন্ত্রাসীর সাথে বসেছিলাম? এভাবে কূটনৈতিক ক্ষেত্রে নম্বর তোলার জন্য সন্ত্রাসবাদকে হাতিয়ার করাটা উচিত হচ্ছে না।'