বিলকিস বানোর ১১ জন ধর্ষককে মুক্তি দিলে বলা হয়নি। গুজরাট সরকারকে তাদের মুক্তি দেওয়ার আর্জি বিবেচনা করতে বলা হয়েছিল। এমনই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রীয় সরকার এবং গুজরাট সরকারকে নোটিশ জারির পাশাপাশি শীর্ষ আদালতের মন্তব্য, '(দণ্ডিতদের) মুক্তির সময় আদৌও বিচার-বিবেচনা করা হয়েছিল কিনা, তা দেখতে হবে।'
বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যে সেইসময় সুপ্রিম কোর্ট সংশ্লিষ্ট রাজ্যে দণ্ডিতদের মুক্তি দেওয়ার নীতির ভিত্তিতে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার পরামর্শ দিয়েছিল। তিনি বলেন, 'আমি কোথাও একটা পড়লাম যে আদালত (সুপ্রিম কোর্ট) মুক্তির অনুমতি দিয়েছে। না, আদালত শুধু বিবেচনা করতে বলেছিল।'
আরও পড়ুন: Mimi-Nusrat: ‘অন্যায় শেষের অপেক্ষায়’, বিলকিসের ধর্ষকদের মুক্তি, মোদীকে খোঁচা মিমি-নুসরতের
২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সময় বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। তিন বছরের মেয়ে-সহ বিলকিসের পরিবারের সাতজনকে হত্যা করা হয়েছিল। গত ১৫ অগস্ট ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছরে বিলকিস গণধর্ষণ মামলায় ১১ জনকে দণ্ডিত মুক্তি দেয় গুজরাট সরকার। রীতিমতো ফুল, মালা পরিয়ে তাদের বরণ করা হয়েছিল। তা নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
তারইমধ্যে গুজরাটের এক বিজেপি বিধায়ক সিকে রাজুলি দাবি করেছিলেন, ‘ওরা কোনও অপরাধ করেছে কিনা জানি না। কিন্তু অপরাধ করার কোনও উদ্দেশ্য নিশ্চয় ছিল। ওরা ভালো মানুষ - ব্রাহ্মণ এবং ব্রাহ্মণদের সংস্কার ভালো। ওদের কোণঠাসা করা এবং শাস্তি দেওয়া কারও খারাপ উদ্দেশ্য হতে পারে।’ সেই মন্তব্য নিয়ে আরও বিতর্ক শুরু হয়। বিলকিসের ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন সুহাসিনী আলি, মহুয়া মৈত্ররা।
২০২২ সালে কী হয়েছিল?
২০০২ সালের মার্চে দাহোদ জেলায় লিমখেড়া তালুকায় রাধিকাপুর গ্রামে একদল দুষ্কৃতী বিলকিস বানোর পরিবারের উপর হামলা চালিয়েছিল। গণধর্ষণ করা হয় বিলকিসকে৷ পরিবারের সাতজনকে খুন করা হয়েছিল৷ পরিবারের বাকি ছয় সদস্য পালিয়ে যেতে পেরেছিলেন৷ পরে ২০০৪ সালে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। বিলকিসকে গণধর্ষণ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের গণহত্যার দায়ে ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সাজা কমানোর আর্জিতে চলতি বছর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল এক দণ্ডিত। পরবর্তীতে রাজ্য সরকারের তরফে ১১ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়।