জঘন্য পাপ। রাজ্য সরকার যেন এরকম নৃশংস অপরাধীদের শান্তি নিশ্চিত করে। রামপুরহাটের বগটুইয়ের নৃশংস ঘটনা নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেইসঙ্গে তিনি জানান, অপরাধীদের দ্রুত সাজা নিশ্চিত করার জন্য রাজ্য সরকারকে সবরকমভাবে সাহায্য করবে কেন্দ্র।
বুধবার বিকেলে ভার্চুয়ালি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের বিপ্লবী ভারত গ্যালারির উদ্বোধন করেন মোদী। সেখানে ভাষণ শুরুর আগেই মোদী বলেন, ‘সবার আগে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের হিংসার ঘটনায় শোকাহত। আমি আশা করছি যে রাজ্য সরকার বাংলার মাটিতে এরকম জঘন্য পাপ যারা করেছে, তাদের অবশ্যই শান্তি দেবে। আমি বাংলার মানুষকে আবেদন করব, এরকম নৃশংস ঘটনা যারা করেছে এবং যারা এই অপরাধীদের মদত জোগায়, তাদের যেন কখনও ক্ষমা না করেন। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আমি আশ্বস্ত করছি যে অপরাধীদের দ্রুত সাজা দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার যা সাহায্য করবে, তা ভারত সরকার করবে।’
গত সোমবার রাতে বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হন। তারপরেই তাণ্ডব শুরু হয় বগটুই গ্রামে। একাধিক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। জীবন্ত পুড়ে মৃত্যু হয় ১০ জনের। তবে মৃতের সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন দাবি করা হচ্ছে। পুলিশের দাবি, আটজন মারা গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে দমকল দাবি করেছিল, ১০ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, সরকারকে ব্যতিব্যস্ত করতে চক্রান্ত করা হয়েছে। বলেন, 'আমরা চাই না খুন হোক। কিন্তু অজান্তে হয়ে যায়।'
হাইকোর্টের রায়
বগটুইয়ের নৃশংস ঘটনা নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। বুধবার মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারের অ্যাডভোকেট জেনারেল সওয়াল করেন, সিবিআই বা অন্য কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে তদন্তভার দেওয়ার আগে রাজ্যের তদন্ত প্রক্রিয়াও দেখা উচিত। যে সওয়াল গ্রহণ করেছে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চ। হাইকোর্ট বলেছে, ‘প্রথমে আমরা রাজ্য সরকারকে আগামিকাল দুপুর দুটোর মধ্যে কেস ডায়েরি বা রিপোর্ট প্রদানের সুযোগ দিচ্ছি। এখনও পর্যন্ত যা তদন্ত হয়েছে, সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট ২৪ মার্চ দুপুর দুটোর মধ্যে প্রদান করতে হবে।’
সেইসঙ্গে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, পুরো এলাকা সিসিটিভিতে মুড়ে ফেলতে হবে। তাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জায়গা থাকতে পারবে। যা সব দিকের ছবি তুলে ধরতে হবে। পরবর্তী নির্দেশের আগে পর্যন্ত টানা রেকর্ডিং করারও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমানের জেলা জজের উপস্থিতিতে সেইসব সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাক্ষীদের যাতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রদান করা হয়, তা পূর্ব বর্ধমানের জেলা জজের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং আইজিকে নিশ্চিত করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে যে তাঁদের কোনওভাবে প্রভাবিত না করা হয় বা ভয় দেখানো না হয়।