আবার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে বাঁধল জোর বিতর্ক। ১৯৪৫ সালের ১৮ অগস্ট। সালটা আলাদা কিন্তু তারিখটা এক। আজকের দিনে তাইওয়ানের তাইপেইতে বিমান দুর্ঘটনায় কি মৃত্যু হয়েছিল নেতাজির? এই প্রশ্নের উত্তর আজও অজানা। অথচ নেতাজির ‘মৃত্যুবার্ষিকী’ নিয়ে টুইট করে বিতর্কে জড়ালেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক। কেন্দ্রীয় সরকারের এই কাজে গোটা দেশ তেতে উঠেছে। কারণ এই বিষয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে টুইট করেছে বিজেপি ও কংগ্রেস। ওই দু’টি টুইট ঘিরে হইচই শুরু হয়ে যায়। বিষয়টির তীব্র বিরোধিতা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
ঠিক কী টুইট করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী? কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে টুইটে লেখেন, ‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানাই। নেতাজির সংগ্রাম, ত্যাগ ও দেশের প্রতি নিষ্ঠা সমস্ত তরুণদের অনুপ্রেরণা। জয় হিন্দ!’ পাশাপাশি টুইট করেছে কংগ্রেসও। তাঁদের পক্ষ থেকেও একটি ছবি টুইট করা হয়েছে। সেখানেও লেখা, সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যুদিন ১৮ অগস্ট, ১৯৪৫। এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘যে দেশের প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা দিবসের দিন লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে বলতে পারেন মাতঙ্গিনী হাজরা অসমের মহিলা সেই মন্ত্রিসভার সদস্যের এমন টুইট করাটাই দস্তুর।’
উল্লেখ্য, ১৯৪৫ সালের ১৮ অগস্ট তাইওয়ানের তাইপেইতে বিমান দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু ওই বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু হয়েছে কিনা তা নিয়ে কোনও প্রমাণ মেলেনি। তারপরও এই টুইট জোর বিতর্ক তৈরি করেছে। তাই বিজেপি–কংগ্রেসকে আক্রমণ করে পাল্টা টুইটে কুণাল গোষ লেখেন, ‘কঠোর বিরোধিতা করছি। এই দিনে মৃত্যুর কোনও প্রমাণ নেই। কংগ্রেস এবং বিজেপি কেউই নেতাজির শেষ অবস্থা খোঁজার চেষ্টা করেনি। ভারত এবং বাংলার আবেগ নিয়ে খেলবেন না। প্রথমে মৃত্যু নিশ্চিত করুন। ক্লাসিফায়েড ফাইল প্রকাশ্যে আনুন।’
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে টুইটে লেখা হয়, ‘আজাদ হিন্দ ফৌজই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মোড় ঘুরিয়েছিল। জাতীয়তাবাদের ধারণায় বিশ্বাসী, ভারতমাতার সাহসী সন্তানরা নেতাজির নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতার জন্য সব কিছু ত্যাগ করে লড়াই করছিলেন। ভারতমাতার প্রিয় পুত্র নেতাজিকে তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে কংগ্রেস পরিবার।’ গোটা বিষয়টির প্রতিবাদ করে ফরোয়ার্ড ব্লক নেতা নরেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘সুভাষ চন্দ্রের নামেই ওদের আতঙ্ক। এই মিথ্যাচার বন্ধ হোক। দেশের ইতিহাসকে বিকৃত করছে। তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’ হইচই শুরু হতেই রমেশ পোখরিয়ালের করা টুইটটি কিছুক্ষণের মধ্যে ডিলিট করে দেওয়া হয়। তবে কংগ্রেসের টুইটটি এখনও পর্যন্ত রয়েছে।