বঙ্গ–বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযান ইস্যুতে সোমবার রাজ্য নেতাদের তুলোধনা করল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কড়া ধমকের মুখে পড়তে হল বঙ্গ–বিজেপির সাংসদদের। গত সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তুলোধনা করেছে বাংলার বিরোধী দলনেতা–সহ বিজেপি বিধায়কদের বলে সূত্রের খবর। ‘অযোগ্যদের ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কে টিকিট দেয়, দেখব!’ বলে এসেছে হুঁশিয়ারিও। নয়াদিল্লিতে নিজের বাড়িতে হওয়া বৈঠকে বাংলার পাঁচটি অঞ্চল থেকে পাঁচটি বড় মাপের প্রকল্পের পরিকল্পনা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে জমা দেওয়ার জন্য বঙ্গ–বিজেপি সাংসদদের নির্দেশ দিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসল। আর তখনই সদস্য সংগ্রহ না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করলেন সুনীল বনসল বলে সূত্রের খবর।
এদিকে বাংলায় সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্য এক কোটি বেঁধে দিয়েছিলেন অমিত শাহ। এখনও সদস্য সংগ্রহ পঞ্চাশ লক্ষ স্পর্শ করেনি। তাই বিজেপির সাংসদদের উপর অসন্তোষ প্রকাশ করেন বনসল। এখন পর্যন্ত ৪০ লক্ষ সদস্য সংগ্রহ হয়েছে। যাঁদের মধ্যে ৩৫ লক্ষের নাম–ঠিকানা যাচাই শেষ করেছে দল। সাংসদদের এক লক্ষ করে সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হলেও তা হয়নি। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলায় সদস্য সংগ্রহ অভিযান চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর রাজ্য বিজেপির অবস্থা খতিয়ে দেখতে ১৫ দিন অন্তর পশ্চিমবঙ্গ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সুনীল বনসল বলে সূত্রের খবর। উপনির্বাচনে ‘গড়’ মাদারিহাট হাতছাড়া হয়েছে। বাংলা দখলের স্বপ্ন ভঙ্গ আজও তাড়া করে বেড়াচ্ছে নরেন্দ্র মোদী–অমিত শাহকে।
আরও পড়ুন: কুড়ি জন বিধায়কের মধ্যে ১৬ জনকে বসিয়ে দিল আম আদমি পার্টি, দ্বিতীয় তালিকায় চমক দিল্লিতে
অন্যদিকে সুনীল বনসল যে বৈঠক করেন সেখানেই কড়া ধমকের মুখে পড়তে হয়েছে শান্তনু ঠাকুর, জয়ন্ত রায়, সৌমিত্র খাঁয়ের মতো একাধিক সাংসদকে। কারণ তাঁরা ৫০ হাজারের বেশি সদস্য সংগ্রহ করতে পারেননি বলেই সূত্রের খবর। সুনীল বনসল প্রশ্ন তোলেন বৈঠকে, ‘এতদিন কী করছিলেন? মেম্বারশিপ নিয়ে কোনও বিধায়ক কাজ করছে না। নিজের এলাকায় বিধায়কদের দেখা যায় না। এই সব অযোগ্যদের পরেরবার কে টিকিট দেয় আমি দেখব।’ এই ভাষা বৈঠকে ব্যবহার করে ধমক দিয়েছে সুনীল বনসল বলে সূত্রের খবর। কোনও অজুহাত যে তিনি শুনতে চান না সেটাও ওই বৈঠকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
এছাড়া ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সদ্য ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের ফলাফলই তার প্রমাণ। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তাই পাল্টা উত্তরবঙ্গ, রাঢ়বঙ্গ, মেদিনীপুর, কলকাতা, নদিয়া মিলিয়ে রাজ্যের পাঁচটি প্রান্ত থেকে পাঁচটি বড় প্রকল্পের পরিকল্পনা দ্রুত জমা দিতে বলা হয়েছে। সেটা এইমস হাসপাতাল, রেল প্রকল্প বা রেল কারখানা, ভারী শিল্পের স্থাপনের প্রস্তাব হতে পারে বলে বঙ্গ–বিজেপির বিধায়ক–সাংসদদের নির্দেশ দিয়েছেন সুনীল বনসল বলে খবর। বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালকে ধমক খেতে হয়। আর সাংসদদের পর্যন্ত ধমক খেতে হয়েছে বলে সূত্রের খবর।