ভোটের আগে কেউ কল্পনা করতে পাননি। এমনকী চমকে গিয়েছেন দীর্ঘদিনের বিজেপি নেতারা। কাটিহারের এক বিজেপি নেতা তো বলেই ফেললেন, 'তাঁর আচমকা প্রমোশনে সবাই অবাক। এটার (সিদ্ধান্তের) পিছনে নিশ্চয়ই কিছু রাজনৈতিক কারণ আছে। যা নেতাদেরও বোধগম্যের বাইরে।'
ঠিক সেই রাজনীতির কারণটাই খুঁজে পাচ্ছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তাঁদের মতে, বিহার তো ভোট মিটে গিয়েছে। আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে ভোটের দিকে তাকিয়ে তারকিশোর প্রসাদকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে।
কিন্তু কেন? বিহারের একজনকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী করার সঙ্গে বাংলার ভোটের কী সম্পর্ক আছে? আর সেখানেই উঠে আসছে তারকিশোরের বিধানসভা কেন্দ্রের গুরুত্ব। ২০০৫ সাল থেকে টানা চারবার কাটিহারে (সদর) জিতেছেন তিনি। যে কেন্দ্র বিহারের সীমাঞ্চলে অবস্থিত।
বিষয়টি নিয়ে পূর্ণিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অমরেন্দ্র কুমার ঠাকুর বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গের একটি বড় অংশের সঙ্গে সীমাঞ্চলের সীমান্ত আছে এবং পশ্চিমবঙ্গের ভোটের দিকে তাকিয়ে একজন কট্টর বিজেপি নেতাকে প্রমোশন দেওয়া হল।' সেই চালের সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আরও বলেন, 'ভাষা, সাংস্কৃতিক যোগ এবং উত্তর দিনাজপুর এবং মালদহের ২০ টির মতো আসনের সঙ্গে সীমাঞ্চলের নৈকট্য অবশ্যই এই প্রমোশনের অন্যতম কারণ হবে।'
সীমাঞ্চলের মধ্যে পড়ে পূর্ণিয়া, আরারিয়া, কিষানগঞ্জ এবং কাটিহার জেলা। সেই চার জেলার একটি বড় অংশে বাঙালিদের বাস। যাঁরা পশ্চিমবঙ্গে বিয়ে করেন। বাংলাভাষীও অনেকে আছেন। শুধু তাই নয়, রেলের মাধ্যমে যুক্ত আছে সীমাঞ্চল এবং বাংলা। ফলে সীমাঞ্চলের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের নিত্য যোগাযোগও আছে।
এবার বিহারের বিধানসভা ভোটে সীমাঞ্চলের ২৪ টির মধ্যে আটটি বিধানসভা আসনে জিতেছে বিজেপি। বিশেষত গেরুয়া শিবিরের ফায়দা করে দিয়েছে এআইএমআইএম। তারইমধ্যে সীমাঞ্চলের এক বিজেপি নেতাকে নীতিশ কুমারের ডেপুটি করে বিজেপি এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। যিনি আবার পিছিয়ে পড়ার সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি।
নাম গোপন রাখার শর্তে এক প্রবীণ বিজেপি নেতা বলেন, 'সীমাঞ্চল লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে যদি একইরকম হাওয়া দেখা যায়, তাহলে বাংলা দখল করা সহজ হবে।'