প্রায় তিন দশক পর দিল্লিতে ক্ষমতায় ফিরেছে বিজেপি। বিধানসভায় আপ দুর্গ ছিনিয়ে নিয়েছে পদ্ম শিবির। ৭০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে বিজেপি ৪৮টি আসনে জয়ী হয়েছে, যা সংখ্যাগরিষ্ঠতার থেকে বেশি। সেখানে আপ জিতেছে ২২টি আসনে। তবে কংগ্রেস খাতা খুলতে পারিনি। দিল্লিতে বিজেপির শেষ মুখ্যমন্ত্রী ছিল ২৬ বছর আগে ১৯৯৩ সাল থেকে ৯৮ সাল পর্যন্ত। কিন্তু, বিভিন্ন কারণে এই সময়ের মধ্যে আবার তিনবার মুখ্যমন্ত্রী বদলাতে হয়েছিল বিজেপিকে।
আরও পড়ুন: কেজরির হারে পঞ্জাবে ভাঙতে পারে মানের সংসার? AAP-কে নিয়ে সামনে চাঞ্চল্যকর দাবি
আগে দিল্লিতে কারা ছিলেন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী?
১৯৯১ সালের ৬৯তম সংবিধান সংশোধনী আইনের মাধ্যমে রাজ্য বিধানসভা পুনর্বহালের পর ১৯৯৩ সালে বিজেপি দিল্লিতে ক্ষমতায় আসে। ক্ষমতায় আসার পর সেই সময় বিজেপি মদনলাল খুরানাকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিল। তিনি তখন দিল্লির সিংহ নামেই পরিচিত ছিলেন। সেই সময় বিজেপি ৭০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৪৯টি আসন জিতেছিল এবং কংগ্রেস পেয়েছিল ১৪টি আসন। তবে তার দুবছরের মধ্যেই হাওয়ালা কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ায় খুরানার। ফলে লাগাতার চাপের মুখে পড়ে শেষপর্যন্ত মধ্যে তিনি পদত্যাগ করেন।
তাঁর পদত্যাগের পর বিজেপি সাহেব সিং বর্মাকে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী করেছিল। উল্লেখ্য, তিনি বিজেপির বর্তমান প্রার্থী পরবেশ বর্মার বাবা। তাঁর কাছেই পরাজিত হয়েছেন আপ সুপ্রিমো কেজরিওয়াল। তবে সাহেব সিংও বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারেননি। সেই পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চরম সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল সাহেব সিংকে। তাঁর জমানায় ১৯৯৮ সালে দিল্লিতে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৬০ টাকা ছুঁয়েছিল। ফলে তীব্র প্রতিবাদের কারণে শেষপর্যন্ত ৩১ মাস মুখ্যমন্ত্রী থাকার পর তিনি পদত্যাগ করেন। পরে দিল্লির প্রথম মহিলা নেত্রী হিসেবে সুষমা স্বরাজ বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন দিল্লিতে। তবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁর মেয়াদ মাত্র ৫২ দিন স্থায়ী হয়েছিল।
পরে ১৯৯৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসে। তখন দিল্লিতে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন শিলা দীক্ষিত। তিনি ১৫ বছর ধরে রাজধানীর মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। শেষে ২০১৩ সালে তিনি কেজরিওয়ালের কাছে পরাজিত হন।ওই বছর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ৩১টি আসনে জয়ী হয়েছিল। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য আরও পাঁচটি আসন দরকার ছিল। এদিকে, আপ এবং কংগ্রেস যথাক্রমে ২৮ এবং আটটি আসন পেয়ে হাত মিলিয়েছিল। ফলে তারা সরকার গঠন করে। যদিও সেই সরকার বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মাত্র ৪৯ দিন পর সরকার ভেঙে যায়। এরপরে রাজধানীতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়।
ফের ২০১৫ সালে নির্বাচনে আপ ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ী হয়েছিল। ৭০টি আসনের মধ্যে ৬৭টি আসন জিতেছিল। বিজেপি তিনটি আসন জিতেছিল। কংগ্রেস কোনও আসন পায়নি। ২০২০ সালে আপ আবারও ৭০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৬২টি আসন জিতে সরকার গঠন করে।