ক্ষমতায় এলে নির্বাচনী বন্ড ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে বিজেপি। এমনই জানালেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। শুক্রবার 'হিন্দুস্তান টাইমস'-র এডিটর-ইন-চিফ সুকুমার রঙ্গনাথন এবং ন্যাশনাল পলিটিক্যাল এডিটর সুনেত্রা চৌধুরীর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে সীতারামন জানান, সবপক্ষের সঙ্গে বিস্তারিতভাবে আলোচনার পরে নির্বাচনী বন্ড ফিরিয়ে আনতে চাইছে বিজেপি। তবে আগে নির্বাচনী বন্ডের যে প্রকল্প ছিল, তাতে কয়েকটি পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
সীতারামন বলেছেন, '(নির্বাচন বন্ড নিয়ে) এখনও সবপক্ষের সঙ্গে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করতে হবে আমাদের। দেখতে হবে যে আমরা কী তৈরি করতে পারি বা আনতে পারি, যা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। যা স্বচ্ছতা বজায় রাখতে পারবে এবং ওই কাঠামোর মধ্যে যাতে কালো টাকা না ঢুকে যায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।' সেইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, ‘সম্প্রতি যে (নির্বাচনী বন্ড) প্রকল্পটি বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট, সেটি স্বচ্ছতা এনেছিল। আগে যেটা ছিল, সেটা হল যে তাতে কোনও বাধা ছিল না।’
নির্বাচনী বন্ড স্কিম অসাংবিধানিক, রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট
২০১৮ সালে নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প চালু করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেই প্রকল্পের আওতায় স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (এসবিআই) যে কোনও শাখা থেকে নির্বাচনী বন্ড কেনা যেত। ওই প্রকল্পের আওতায় কর্পোরেট সংস্থাগুলি যে অনুদান প্রদান করত, সেটার ক্ষেত্রে পুরোপুরি করছাড় দেওয়া হত। এমনকী ভারতীয় অনুসারী সংস্থার মাধ্যমে বিদেশি সংস্থাগুলিও অনুদান প্রদান করতে পারত। কে বা কারা নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে দিয়েছেন, সেই তথ্য প্রকাশ করা হত না। সেই তথ্য গোপন রাখত ব্যাঙ্ক এবং অনুদান পাওয়া রাজনৈতিক দলগুলি।
কিন্তু চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী বন্ড স্কিমকে অসাংবিধানিক বলে খারিজ করে দেয় ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। শীর্ষ আদালতের তরফে একেবারে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, বেনামি নির্বাচনী বন্ডের ফলে সংবিধানে প্রদত্ত বাকস্বাধীনতার অধিকার লঙ্ঘিত হয়। মোদী সরকারের সেই প্রকল্প সংবিধানের ১৯ (১) (এ) ধারার বিরোধী। লঙ্ঘন করে তথ্য জানার অধিকার আইনকেও।
নির্বাচনী বন্ড স্কিমে কয়েকটি গলদ ছিল, ঘুরিয়ে স্বীকার সীতারামনের
সীতারামন স্বীকার করে নিয়েছেন যে নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ের সংশোধনের প্রয়োজন আছে। যেমন - সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে নির্বাচন কমিশন এবং এসবিআইয়ের তরফে যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে ইঙ্গিত মিলেছে যে বিভিন্ন শেল কোম্পানি এবং লোকসানে চলা সংস্থাও রাজনৈতিক দলগুলিকে অনুদান প্রদান করা হচ্ছিল। বিস্তারিতভাবে আলোচনার পরে সেরকম বিষয়গুলি ফিরিয়ে আনা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন সীতারামন।