গোমাংস ভক্ষণ নিয়ে অসমের বিজেপি সরকারের তরফে যে নির্দেশিকা কার্যকর করা হয়েছে, তার সঙ্গে সহমত হতে পারল না বিহারে ও কেন্দ্রে বিজেপির জোটসঙ্গী জেডি(ইউ)।
উল্লেখ্য, অসম সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, রাজ্যের কোনও হোটেল, রেস্তোরাঁ বা প্রকাশ্য স্থানে গোমাংস খাওয়ার জন্য পরিবেশন করা যাবে না। এই স্থানগুলিতে গোমাংসের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে হিমন্ত বিশ্বশর্মার সরকার।
এই প্রসঙ্গে জেডি(ইউ)-এর জাতীয় মুখপাত্র রাজীব রঞ্জন বলেন, 'এটা দুর্ভাগ্যজনক। মানুষকে বিকল্প ব্যবস্থা দেওয়া উচিত ছিল। মানুষ কী খাবে, কী পরবে, সেটা রাজ্যের সরকার ঠিক করে দিতে পারে না। এটা রাজধর্মবিরোধী। অসম সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা উচিত।'
প্রসঙ্গত, গত ১১ মাস ধরে বিহারে এনডিএ-এর বর্তমান সরকার চলছে। বিজেপি এবং জেডি(ইউ) - দুই পক্ষই এই সরকারের অংশ। তার মধ্যে এই প্রথম জেডি(ইউ)-কে এভাবে প্রকাশ্যে এবং ভীষণ সোজাসাপ্টাভাবে বিজেপিশাসিত অসম সরকারের কোনও সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে দেখা গেল! তাও আবার গোমাংস ভক্ষণের মতো অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি বিষয় নিয়ে।
এর আগে ওয়াকফ সংশোধনী বিলের প্রস্তাব-সহ নানা ইস্যুতে বিহারের এই শাসকদল হয় নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখেছে, অথবা কিছুটা রাখঢাক করে মন্তব্য করেছে। কিন্তু, এবার সেসব কিছুই করা হল না।
জেডি(ইউ) নেতা তথা দলের প্রাক্তন মুখপাত্র কে সি ত্যাগী বলেন, ভারতের সংবিধান তার সমস্ত নাগরিককেই পছন্দের খাবার খাওয়ার ও পানীয় পান করার অধিকার দিয়েছে।
দিল্লিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এই প্রসঙ্গে ত্যাগী বলেন, ‘হোটেল এবং প্রকাশ্য এলাকায় গোমাংসের উপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, আমরা তা মানছি না। কারণ, এর ফলে সমাজে উত্তেজনা আরও বাড়বে। যা কিনা আগে থেকেই বেড়ে রয়েছে।’
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, গত দুই দিন ধরে দেখা যাচ্ছে, নানা ইস্যুতে বিজেপিকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে জেডি(ইউ)।
বুধবার রাজীব রঞ্জন যেমন কৃষক আন্দোলন নিয়ে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের অবস্থান প্রসঙ্গে মুখ খোলেন। তিনি বলেন, 'ওঁর মন্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করার কোনও প্রশ্নই নেই। উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় যেটা বলেছেন, তার এক বিরাট ব্যাপ্তি রয়েছে।'
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার মুম্বইয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে একমঞ্চে হাজির হয়েছিলেন জগদীপ ধনখড় ও কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান।
সেই মঞ্চে সরাসরি শিবরাজের কাছে ধনখড় জানতে চান, কেন কৃষকদের ফের রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে হচ্ছে! তাহলে কি কৃষকদের এর আগের দফায় যেসমস্ত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, সেগুলি রক্ষা করা হয়নি!