কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, দলের সাংসদ রাহুল গান্ধী এবং অন্যতম নেত্রী সুপ্রিয়া শ্রীনাতের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা রুজু করার হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপি নেতা তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী বিনোদ তাওড়ে। সেইসঙ্গে, এই মামলায় তিন অভিযুক্তের কাছ থেকে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
কী কারণে মামলার হুঁশিয়ারি?
তাওড়ের দাবি, সম্প্রতি কংগ্রেসের অভিযুক্ত এই তিন নেতানেত্রী তাঁদের সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে একাধিক পোস্ট করেন। যে পোস্টগুলিতে দাবি করা হয়, মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে ভোটারদের ৫ কোটি টাকা বিতরণ করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছেন তাওড়ে। সেই পোস্ট করার জন্যই ওই তিনজনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা রুজু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, এই ঘটনায় আগেই মহারাষ্ট্রের ভাসাই ভিরাইয়ের তুলিনি থানার পুলিশ তাওড়ের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যা নিয়ে নির্বাচনী আবহে বহু বিতর্ক ছড়ায়।
যার জেরে গত ১৯ নভেম্বর নাল্লাসোপারার একটি হোটেলে অনেক 'নাটক' হয়! এরপরই সোশাল মিডিয়ায় এই ঘটনা নিয়ে সরব হন মল্লিকার্জুন খাড়্গে, রাহুল গান্ধী ও সুপ্রিয়া শ্রীনাতে। তাঁরা এভাবে 'অর্থের বিনিময়ে ভোট কেনা'র অপচেষ্টার জন্য ওই বিজেপি নেতা তাঁর দলের তুলোধনা করেন।
হোটেলের ঘটনার পর রাহুল গান্ধী তাঁর এক্স অ্যাকাউন্টে হিন্দিতে লেখেন, 'মোদীজি, কার সিন্দুক থেকে এই ৫ কোটি টাকা বেরোল? কে জনতার টাকা লুট করে তা টেম্পো করে আপনার কাছে পাঠাল?'
হিন্দিতে আক্রমণ করেন খাড়গেও। সোশাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, 'টাকা এবং পেশীশক্তির বিনিময়ে মোদীজি মহারাষ্ট্রকে 'সেফ' রাখতে চাইছেন। একদিকে, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আক্রান্ত হচ্ছেন এবং অন্যদিকে, একজন বরিষ্ঠ বিজেপি নেতা ৫ কোটি টাকা নগদ-সহ হাতেনাতে ধরা পড়ছেন! এটা মোটেই মহারাষ্ট্রের আদর্শ নয়। এবং মহারাষ্ট্রের মানুষই এর যোগ্য জবাব দেবে।'
কংগ্রেসের তিন নেতান্ত্রীকে পাঠানো তাওড়ের নোটিশ:
এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই তিন কংগ্রেস নেতানেত্রীকে আইনি নোটিশ ধরিয়েছেন তাওড়ে। একটি ল' ফার্মের মাধ্যমে তিনি এই নোটিশ পাঠিয়েছেন। তাতে দাবি করা হয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন, মিথ্যা, অবমাননাকর এবং ভুল তথ্যে ভরা।
সেই কারণেই, ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-এর ৩৫৬ নম্বর ধারার আওতায় সংশ্লিষ্ট তিনজনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং তাঁদের কাছ থেকে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণও চাওয়া হবে।
তাওড়ের বক্তব্য, এই মামলা এড়াতে হলে ওই তিন কংগ্রেস নেতানেত্রীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। সেইসঙ্গে, মারাঠি, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষার তিনটি সংবাদপত্রের প্রথম পৃষ্ঠায় লিখিতভাবে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হবে। পাশাপাশি, তাঁদের এক্স হ্যান্ডেলেও তাওড়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে পোস্ট করতে হবে।
তাওড়ের হুঁশিয়ারি, যদি অভিযুক্তরা তাঁর এই দাবিগুলি না মানেন, তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হবেন তিনি।