গোয়ায় জোর ধাক্কা খেল ক্ষমতাসীন বিজেপি। গোয়ার শঙ্খলি পৌর কাউন্সিলে বিজেপি সমর্থিত চেয়ারপার্সন অনাস্থা ভোটে হেরে গেলেন। উল্লেখ্য, শঙ্খলি পৌর কাউন্সিলটি গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্তের বিধানসভা কেন্দ্রের অধীনে। ১৩ সদস্যের কাউন্সিলের অনাস্থা ভোটে কংগ্রেস ৭-০ ভোটে জিতে যায়। বিজেপি সমর্থিত যশবন্ত মাদকর এবং তাঁর অনুগামী কাউন্সিলররা অনাস্থা ভোটের সময় অনুপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, এই অনাস্থা ভোটে যাতে গেরুয়া শিবিরের নাক না কাটা যায়, তার জন্য কম চেষ্টা করা হয়নি। বিরোধী কাউন্সিলরকে বরখাস্ত করার আবেদন থেকে শুরু করে অনাস্থা ভোট বারংবার পিথিয়ে দেওয়া, সব প্রচেষ্টাই শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, যাতে তারা ম্যাজিক ফিগার না ছুঁতে পারে, তার জন্য তাদের কাউন্সিলরকে বরখাস্ত করার আবেদন করা হয়েছিল। তবে সেই কাউন্সিলর হাইকোর্ট থেকে সেই আবেদনের উপর স্থগিতাদেশ পান। পরে অন্য এক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তবে এক্ষেত্রেও সেই কাউন্সিলর আগাম জামিন পেয়ে যান।
কংগ্রেসের তরফে দলীয় নেতা ধর্মেশ সগ্লানি অভিযোগ করেন, 'কাউন্সিলের ক্ষমতা ধরে রাখতে এই সব কৌশলের নেপথ্যে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন। তারা একটি বার্তা পাঠাতে চাইছে, কেউ যদি তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় তাহলে সেই ব্যক্তিকে হেনস্থা করার উদ্দেশ্যে সবকিছু করা হবে। নতুন প্রজন্মের যারা রাজনীতিতে আসতে চায়, তাদেরকে কী বার্তা পাঠানো হচ্ছে এই স বকৌশলের দ্বারা?'
উল্লেখ্য, উত্তর গোয়ার শঙ্খলি গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী কেন্দ্রের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই কেন্দ্র থেকে গত দুই বারের বিধায়ক প্রমোদ সাওয়ান্ত। এই শঙ্খলিতে মাত্র একটি আসনের ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় রেখেছিল বিজেপি। তবে সমীকরণ বদলে যায় গ ত বছর। নভেম্বরে বিজেপির এক কাউন্সিলর দমোদর ঘাড়ি প্রয়াত হলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় বিজেপি। এরপর চলতি বছরের ২০ মার্চ সেই আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বিজেপি সমর্থিত প্রার্থী হেরে যান। নির্বাচনের দুই দিন আগেই অবশ্য কংগ্রেস অনাস্থা প্রস্তাব আনে। তবে পৌর প্রশাসনের ডিরেক্টর ৩০ এপ্রিল সেই বৈঠক ডাকেন। পরবর্তীতে বম্বে হাইকোর্টের নির্দেশে বৈঠক বসে ১৬ এপ্রিল। যাতে বিজেপি সমর্থিত কাউন্সিলররা অনুপস্থিত ছিলেন। এবং খুব সহজেই কংগ্রেস জয় পায়।
অনাস্থা ভোটে জেতার পর কাউন্সিলের বিরোধী দলনেতা দিগাম্বর কামাত বলেন, 'হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে গোয়ায় গণতন্ত্র রক্ষা হয়েছে। শঙ্খলিতে বিজেপর হার স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে বিজেপি সরকারের দিন ঘনিয়ে এসেছে। শঙ্খলির ৭ কাউন্সিলরকে অভিনন্দন ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য।'
এদিকে গোয়ার প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি বলেন, 'বিজেপির সরকার দেশে গণতন্ত্র শেষ করতে প্রস্তুত এবং ইতিমধ্যে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা স্থাপন করেছে তারা। ডঃ প্রমোদ সাওয়ান্ত তাঁর নিজের নির্বাচনী এলাকার অন্তর্গত শঙ্খলি পৌরসভায় হেরে এখন চিন্তিত।'