বিলকিস বানোর গণধর্ষকদের সম্প্রতি মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে বিতর্ক চরমে। সেই বিতর্কের আগুনে এবার ঘি ঢাললেন গুজরাটের বিজেপি বিধায়ক। বিলকিস বানোর ধর্ষকদের নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করেন বিজেপি বিধায়ক সিকে রাজুলি। তিনি বলেন, ‘বিলকিস বানোর গণধর্ষকদের মূল্যবোধ খুব ভালো রয়েছে এবং তারা ব্রাহ্মণ।’
বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘তারা কোনও অপরাধ করেছে কি না জানি না। কিন্তু অপরাধ করার কোনও উদ্দেশ্য নিশ্চয় ছিল। তারা ভালো মানুষ - ব্রাহ্মণ। এবং ব্রাহ্মণদের 'সংস্কার' ভালো। তাদের কোণঠাসা করা এবং শাস্তি দেওয়া কারও খারাপ উদ্দেশ্য হতে পারে।’ বিধায়কের এই ভিডিয়োটি পোস্ট করেন টিআরএস-এর নেতা ওয়াই সতীশ রেড্ডি। তিনি লেখেন, ‘বিজেপি আর কত নীচে নামবে।’
মুক্তি পায় বিলকিসের ধর্ষকরা
এদিকে বিলকিস বানো গণধর্ষণে সাজাপ্রাপ্তরা স্বাধীনতা দিবসের দিন মুক্তি পেয়েছে। এই ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে দেশজুড়ে। ২০০২ সালের ঘটনায় মোট ১১ জন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি মুক্তি পায়। গোধরা কাণ্ডের পর বিলকিস বানোর পরিবারের ৭ জন সদস্যকে হত্যা এবং গর্ভবতী বিলকিসকে গণধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল এই ১১ জন। এর জেরে যাবজ্জীবন সাজা হয় তাদের। এই আবহে দেশের ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে গোধরা কারাগার থেকে এই ১১ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ‘নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রথম পাতাস সিসোদিয়ার ছবি ছাপতেই...’, কেন্দ্রকে তোপ কেজরির
কী ঘটেছিল দুই দশক আগে?
উল্লেখ্য, ২০০২ সালের মার্চ মাসে দাহোদ জেলায় লিমখেড়া তালুকায় রাধিকাপুর গ্রামে একদল দুষ্কৃতী বিলকিস বানোর পরিবারের উপর হামলা চালিয়েছিল। গণধর্ষণ করা হয় বিলকিসকে৷ তাঁর পরিবারের ৭ জন সদস্যকে খুন করা হয়৷ পরিবারের অন্য ৬ জন সদস্য পালিয়ে যেতে পেরেছিলেন৷ পরে ২০০৪ সালে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। বিশেষ সিবিআই আদালত বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের গণহত্যার অভিযোগে ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি ১১ জন অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাবাসের আদেশ ঘোষণা করেছিল৷ তবে এই বছর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্য সরকার পঞ্চমহলের কালেক্টর সুজল মায়াত্রার নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দোষীদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখে। সর্বসম্মতিক্রমে কারাবাসের সময় হ্রাসের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় কমিটিতে। সেই মতো সোমবার দোষীদের ছেড়ে দেওয়া হয়।