নয়াদিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি। এই ঘটনায় মৃতদের অধিকাংশই মহিলা। এই ঘটনা নিয়ে এবার নিজের প্রতিক্রিয়া দিলেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর মতে রেল স্টেশনে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না। যেখানে রেল এই ঘটনার দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টায় রয়েছে, সেখানে শুভেন্দুর এহেন মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এদিকে নিজের মন্তব্যকে 'ব্যালেন্স' করতে গিয়ে সাধারণ যাত্রীদেরও সচেতন থাকার বার্তা দিয়েছেন শুভেন্দু। উল্লেখ্য, নয়াদিল্লি কাণ্ডে অভিযোগ উঠেছে, স্টেশনে ভিড় সামাল দেওয়ার জন্যে পর্যাপ্ত পুলিশ ছিল না। এরই সঙ্গে স্টেশনের ঘোষণা বিভ্রান্তিরও অভিযোগ উঠছে। (আরও পড়ুন: 'প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে', যৌথ অর্থনীতি গড়ে তুলতে ভারতের হাত ধরার বড় বার্তা ইউনুস)
আরও পড়ুন: সীমান্তে কাঁটাতার জট কাটবে? বাংলাদেশি উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জয়শংকর
এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এই ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে সতর্ক এবং সচেতন থাকতে হবে। আর স্টেশনে ব্যবস্থা আরও টাইট হওয়া উচিত ছিল। তবে এরপরে সঙ্গে সঙ্গে রেলমন্ত্রী কাজে নেমেছেন। সরকার কাজ করছে। ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে। যেভাবে সড়কপথে ভিড় সামলানো হচ্ছে, দিল্লি পুলিশ, হরিয়ানা পুলিশ, বিহার পুলিশ, উত্তরপ্রদেশ পুলিশ, মধ্যপ্রদেশ পুলিশ... যেভাবে ২০০ কি ২৫০ কিলোমিটার আগেই ভিড় হলে গাড়িগুলিকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যেখানে যানজট তৈরি হচ্ছে, সেখানে পুলিশ গিয়ে জল ও খাবার দিয়ে আসছে... সেই একই ভাবে রেল প্ল্যাটফর্মে ব্যবস্থা থাকা উচিত ছিল।' (আরও পড়ুন: 'মনে হল যেন ট্রেন দুর্ঘটনা...', ভূমিকম্পে কাঁপল দিল্লি, আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ)
আরও পড়ুন: ইউনুসের বাংলাদেশে 'বিপ্লবীরা' নারীবিদ্বেষী? বিস্ফোরক 'হাসিনা বিরোধী' ছাত্রীরাই
এরপর শুভেন্দু আরও বলেন, 'এই ক্ষেত্রে আমাদের যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে যাঁরা পরিবার নিয়ে যাচ্ছেন, যাঁরা পরিবারকে নেতৃত্ব দিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন... তাঁদেরও ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সচেতন থাকা উচিত ছিল। দুই ক্ষেত্রেই একটি খামতি ছিল। স্টেশনেও অনেক ব্যবস্থা ছিল না। তবে এখন দেখতে হবে যে পরবর্তী সময়ে কীভাবে এই ধরনের ঘটনা আটকানো যায়। রেলমন্ত্রী তার জন্যে কাজ করছেন। তাঁর দল, সরকার সবাই কাজ করছে। যাত্রীদেরও এই বিষয়ে এবার জাগ্রত থাকতে হবে।' (আরও পড়ুন: 'মার্কিন স্বপ্ন' পূরণ করতে পঞ্জাবে ফেরত আসা ৬৫ অবৈধবাসী খরচ করেছিলেন ২৭.৫ কোটি!)
উল্লেখ্য, রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে নয়াদিল্লি স্টেশনের ১৪ এবং ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে এই পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে। জানা গিয়েছে, প্রয়াগরাজের দু'টি ট্রেন বাতিল হওয়ার পরে এই পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ রেলযাত্রীদের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়। যার জেরে পদপিষ্ট হয়ে এখনও পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়। আরও অনেক রেলযাত্রী আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে দিল্লি পুলিশ। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখছে পুলিশ। কী কারণে এই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই বিষয়ে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, 'পদপিষ্ট হওয়ার প্রাথমিক কারণ নির্ণয় করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ এবং সেই সময়ের মধ্যে করা ঘোষণা-সহ সমস্ত উপলব্ধ তথ্য বিশ্লেষণ করব।' ওদিকে জানা যাচ্ছে, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার কারণ হিসেবে প্ল্যাটফর্ম পরিবর্তনের বিষয়ে একটি ভুল ঘোষণার দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। এর জেরে যাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল বলে অভিযোগ। তবে উত্তর রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক যুক্তি দিলেন, একজন সিঁড়ি দিয়ে পিছলে পড়ার জেরেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বার্তা সংস্থা এএনআই-এর পোস্ট করা একটি ভিডিয়োতে উত্তর রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক হিমাংশু শেখর বলেন, 'যখন এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে, খন পটনাগামী মগধ এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে ছিল নয়াদিল্লি স্টেশনের ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। এবং জম্মুগামী উত্তর সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেস ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ছিল। সেই সময় প্ল্যাটফর্ম ১৪ ও ১৫-তে নামতে গিয়ে সিঁড়িতে একজন যাত্রী পা পিছলে পড়ে যান এবং কয়েকজন আঘাত পান এবং তার থেকেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি তদন্ত করছে।'