ভারত-চিন সীমান্তে গিয়ে পিএলএ সৈনিকদের সঙ্গে দেখা করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। শুক্রবার তাওয়াংয়ের কাছে ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে গিয়েছিলেন রিজিজু। সেখানে ভারতীয় সেনার একটি চৌকি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময়ই চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির জওয়ানদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সেই ঘটনার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন কিরেণ রিজিজু নিজে।
ভিডিয়োতে দেখা যায়, বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী দোভাষীর মাধ্যমে তিন পিএলএ জওয়ানের সঙ্গে কথা বলছেন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৫ হাজার ফুট উঁচ্চতায় অবস্থিত এই এলাকায় মোতায়েন থাকার সময় জওয়ানরা কীভাবে নিজেদের সামলান, তা জানতে চান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। জবাবে চিনা সেনারা জানায়, এত উঁচু এলাকায় দায়িত্ব সামলাতে তাঁদের কোনও সমস্যা হয় না এবং তাঁরা স্বাচ্ছন্দ্যে রয়েছেন। এদিকে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের ক্যাপশনে রিজিজু লেখেন, 'এবারের দিওয়ালি আমি অরুণাচলের বুমলায় ভারতীয় জওয়ানদের সঙ্গে কাটিয়েছি।' পিএলএ জওয়ানদের সঙ্গে কথোপকথন নিয়ে তিনি লেখেন, 'চিনা সেনার সঙ্গে কথা বলার পরে এবং আমাদের দিকের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন দেখে আমি বলতে পারি যে সবাই ভারতের অগ্রগতি দেখে এখন গর্বিত হবেন।' এদিকে এই সফরকালে ভারতীয় জওয়ানদের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, 'যেহেতু দীপাবলির সময় আপনারা বাড়ি থেকে অনেক দূরে থাকেন, তাই আমরাও বাড়ি থেকে দূরে এসে আপনাদের সাথে সময় কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
উল্লেখ্য, সম্প্রতি লাদাখে ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় জট কেটেছে। যদিও এই নিয়ে কেকদিন আগেই আবার বিস্ফোরক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করেছিলেন হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। তাঁর দাবি ছিল, অরুণাচল প্রদেশে চিনা সেনা ইয়াংস্টে-তে টহলের অনুমতি দিয়েছে ভারত। ওয়াইসি নিজের পোস্টে লেখেন, 'সরকারি সূত্র মারফত জানতে পেরেছি যে এবার থেকে চিনা টহলকারী দলকে 'আগের মতো' অরুণাচল প্রদেশের ইয়াংস্টে পর্যন্ত আসতে দেবে ভারত এবং তাদের 'আটকানো হবে না'। তো এই কারণেই মোদী সরকার এই চুক্তির বিশদ লুকোচ্ছে দেশের থেকে? অরুণাচলের ওপর আমাদের দীর্ঘ দিনের দাবি প্রত্যাহার করে চিনের কাছে হার মেনেছে মোদী সরকার।'
এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন হয়েছে। এই আবহে লাদাখে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, লাদাখের ডেপস্যাং এবং ডেমচকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় সেনা প্রত্যাহার হয়েছে দিওয়ালির আগেই। ভারত ও চিন, দুই দেশের সেনাই যৌথ ভাবে সেখানে 'যাচাই পর্ব' চালিয়েছে। জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের এপ্রিলের আগে যেখানে যার অবস্থান ছিল, প্রায় সেখানেই ফিরে গিয়েছে ভারত ও চিনা সেনার জওয়ানরা। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে যে সব অস্থায়ী তাঁবু খাটানো হয়েছিল, তা খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই আবহে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া দুই পক্ষের তরফ থেকই সঠিক ভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতেই 'ভেরিফিকেশন' চলেছিল।