'নিজের জিভকে নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত', সংসদে মহুয়া মৈত্র লাগামহীন 'অসংসদীয় ভাষা' প্রয়োগের বিষয়ে এমনই প্রতিক্রিয়া দিলেন বিজেপি সাংসদ হেমা মালিনী। বিজেপির সাংসদ বলেন, 'আবেগতাড়িত এবং অতি উত্তেজিত হয়ে পড়ে কোনও কিছু বলা উচিত নয়। এই সংসদের প্রত্যেক সদস্যই সম্মাননীয় ব্যক্তি। তা মাথায় রেখেই কিছু বলা উচিত।' হেমা বলেন, 'যারা এই কুকথা বলছেন, তাঁরাও সম্মানীয় ব্যক্তি। তাঁদের জানা উচিত। আমাদের তাঁদের সেখানোর প্রয়োজন নেই। নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। অনেক সময়ই উত্তেজনার পারদ চড়ে যায়।' পরে তৃণমূল সাংসদের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে হেমা সাংবাদিকদের বলেন, 'তাঁর (মহুয়া মৈত্র) স্বভাব হয়ত এমনই হবে। আমি তা জানি না।'
প্রসঙ্গত, লোকসভায় কড়া ভাষায় কেন্দ্রকে আক্রমণ শানানোর জন্য পরিচিত মহুয়া মৈত্র। এবার তাঁর বিরুদ্ধে সংসদের অধিবেশন চলাকালীন অসংসদীয় শব্দ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। উল্লেখ্য, বিগত কয়েকদিন ধরেই 'আদানি' ইস্যুতে বারংবার মুলতুবি হয়েছে সংসদ অধিবেশন। মঙ্গলবারও এই ইস্যুতে ঝড়ের সাক্ষী থাকে সংসদ। তবে অন্য একটি ইস্যু নিয়ে বলতে গিয়ে অসংসদীয় ভাষার প্রয়োগ করে বিতর্কে জড়ান কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির ভাষণে ধন্যবাদ জ্ঞাপন প্রস্তাবের উপর লোকসভায় বক্তব্য চলাকালীন এই অসংসদীয় শব্দের প্রয়োগ করেন তৃণমূল সাংসদ।
লোকসভায় নিজের বক্তব্য শেষে তাঁর আসনে বসেও পড়েন মহুয়া মৈত্র। এরপর বলতে ওঠেন টিডিপি সাংসদ কে রাম মোহন নাইডু। সেই সময়ই নাকি বিজেপি সাংসদ রমেশ ভিদুরিকে উদ্দেশ্য করে অসংসদীয় ভাষার প্রয়োগ করেন তৃণমূল সাংসদ। উল্লেখ্য, সেই সময় স্পিকার ওম বিড়লার অনুপস্থিতিতে লোকসভা সামলাচ্ছিলেন বিজেপি সাংসদ বিজেডি সাংসদ ভারত্রুহারি মেহতাব। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, টিডিপি সাংসদ যখন বক্তব্য রাখতে ওঠেন, তখন নিজের আসনে বসেই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে বিজেপি'র বেঞ্চের দিকে তাকিয়ে কিছু বলছেন মহুয়া মৈত্র। তৃণমূল সাংসদের মুখে শোনা যায় ওই অসংসদীয় শব্দটি। হইচই শুরু হয়ে যায় লোকসভায়। এদিকে মহুয়ার মাইক তখনও বন্ধ হয়নি। এর জেরে তাঁর সেই কথা সম্প্রচারিত হয়ে যায়।
পরে এই নিয়ে পালটা বিজেপিকেই তোপ দাগলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ। তার সাফ কথা, 'সংসদীয় আচার আচরণ নিয়ে বিজেপির থেকে শিক্ষা নেব না।' এদিন মহুয়া বলেন, 'আমি অবাক যে বিজেপি আমাদের সংসদীয় শিষ্টাচার শেখাচ্ছে। দিল্লির সেই জনপ্রতিনিধি আমাকে হেনস্থা করেছেন। আমি আপেলকে আপেলই বলব, কমলা বলতে পারব না। তাঁরা যদি আমাকে স্বাধিকার ভঙ্গের কমিটির কাছে নিয়ে যায়, আমি আমার বক্তব্য তুলে ধরব।' মহুয়া এদিন আরও বলেন, 'বিজেপি বলছে, আমি একজন মহিলা হয়ে কীভাবে এই ধরনের ভাষা প্রয়োগ করতে পারি। আমাকে কী তাহলে তাঁর ভাষায় যোগ্য জবাব দিতে পুরুষ হতে হবে? এটাই তো পুরুষতন্ত্র।'