কংগ্রেসের সঙ্গে মার্কিন ধনকুবের জর্জ সোরোসের যোগ নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। এবং এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হলেও নিজের অবস্থানে অনড় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এই নিয়ে নিশিকান্ত বললেন, 'আমি যা বলেছি, তাতে অনড় থাকব। আমি যে ১০টা প্রশ্ন করার পরিকল্পনা করেছিলাম, হয়ত তার সবকটা করতে পারব না। তারা যদি আমাকে ক্ষমা চাইতে বলে, তাহলে আমি নিজেকে রক্ষা করতে ৩৫৭ নং রুল প্রয়োগ করব এবং আমার পূর্ণাঙ্গ চার্জশিট পেশ করব।' উল্লেখ্য, এর আগে ফরাসি সংবাদমাধ্যম মিডিয়াপার্টের রিপোর্ট উদ্ধৃত করে বিজেপি অভিযোগ করেছিল, ওপেন সোসাইটি, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ওসিসিআরপি-র মতো 'প্রক্সি'র মাধ্যমে 'ভুল প্রচার' করছিলেন জর্জ সোরোস। এই নিয়ে বিজেপি গতকাল একটি দীর্ঘ পোস্টও করে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তা নিয়ে আবার আপত্তি জানিয়েছে মার্কিন দূতাবাস। তবে তা সত্ত্বেও বিজেপি নিজেদের অবস্থান বদলে নারাজ। (আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে হিন্দু মহিলা খুনে সামনে এল ‘চিন্ময়-যোগ’, সরব এপার বাংলার নেতারা)
আরও পড়ুন: 'পায়খানা পরিষ্কার করায় কৃতিত্ব…', ৪ দিনে কলকাতা দখলের 'হুংকারের' জবাব তথাগতর
উল্লেখ্য, এর আগে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টকে আক্রমণ শানিয়ে নিজেদের পোস্টে বিজেপি দাবি করেছিল, যে আমেরিকার বর্তমান সরকার ভারতকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টায় লিপ্ত আছে। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ একের পর এক পোস্ট করেছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, গত ৪ বছরে কংগ্রেস যে সব ইস্যুতে বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়েছে, সেই সব ইস্যুই আন্তর্জাতিক প্রচারের ওপর ভিত্তি করেই করা হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, পেগাসাস, আদানি থেকে শুরু করে জাতিগত জগণনা, হাঙ্গার ইন্ডেক্স, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা - এই সব ইস্যুই আন্তর্জাতিক মহল থেকে সমর্থন পেয়েছে কংগ্রেস। (আরও পড়ুন: ফ্যাশন শো-তে 'ব়্যাম্প ওয়াক' সুকান্ত মজুমদারের! চমকে দিলেন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি)
আরও পড়ুন: অসমে তৃণমূল কি নয়া সভাপতি নিয়োগ করল? পোস্ট করেও মোছা হল... ছড়াল বিভ্রান্তি!
সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বিজেপি লিখেছে, 'যখনই কোনও রিসার্চ রিপোর্ট সামনে এসেছে বা বিদেশি কোনও সংস্থার তরফ থেকে কোনও সূচক প্রকাশিত হয়েছে, কংগ্রেস সেই সব ইস্যুকেই হাতিয়ার করে বিজেপি বা কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছে। এটার জেরে প্রশ্ন তো উঠবেই। মনে হচ্ছে, কংগ্রেস যেন পশ্চিমী বিশ্বে সঙ্গী লুকিয়ে রেখেছে। সেখান থেকেই একটি ন্যারেটিভ তৈরি করে ভারতকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। এখন সময় এসেছে এই এজেন্ডাকে প্রকাশ করা।' এরপরে বিজেপির তরফ থেকে আরও লেখা হয়েছে, '২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর ফিন্যানশিয়াল টাইমস একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে - মোদীর রকফেলার: গৌতম আদানি এবং ভারতের কুক্ষিগ শক্তি। এই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিজেপিকে দুর্বল করতে আদানিকে আক্রমণ শানাতে হবে। হিসেব করেই এই ন্যারেটিভ প্রচার করা হয়েছিল ভারত এবং দেশের নেতৃত্বকে দুর্বল করতে।' (আরও পড়ুন: মমতা কি INDIA ব্লককে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য? 'অধিকার' নিয় বড় কথা বললেন শরদ পাওয়ার)
আরও পড়ুন: ভারতকে অস্থিতিশীল করতে চায় USA, অভিযোগ করে BJP, জবাবে মার্কিন দূতাবাস বলল...
এরপর পোস্টে বিজেপি লেখে, '২০২৩ সালের ৩১ অগস্ট, জি২০ শীর্ষ সম্মেলের মাত্র ১০ দিন আগে রাহুল গান্ধী একটি প্রেস কনফারেন্স করেন আদানি ইস্যুত। সেখানে তিনি সরাসরি মোদীকে আক্রমণ শানান। রাহুল গান্ধী উদ্দেশ্য স্পষ্ট ছিল। তাঁর আসল লক্ষ্য ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ভারতের শেয়ার বাজার। তাতে আদানি নিছকই একটি হাতিয়ার ছিল। বিগত ৪ বছরে কংগ্রেস ধারবাহিক ভাবে মোদী সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছে আদানি ইস্যুতে। এই সব হমলার জেরে সংসদ অচল হয়েছে। করদাতাদের কোটি কোটি টাকা এতে নষ্ট হয়েছে।' বিজেপি আরও বলেছে, 'আরও যে ইস্যুতে কংগ্রেস সংসদ অচল করেছে, সেটা হল পেগাসাস। সেই সময় রাহুল গান্ধী কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতকে লক্ষ্য করে আক্রমণ শানিয়েছেন।'
বিজেপির দাবি, 'আদানি এবং পেগাসাস ইস্যুতে একটি সূত্র হল OCCRP। এটি ইউরোপ ভিত্তিক একটি সংবাদসংস্থা। এর থেকেই বোঝা যায়, ভারতের বিরুদ্ধে প্রচারের ক্ষেত্রে কংগ্রেস এবং OCCRP-র মধ্যে যোগ আছে। ২০২১-২০২২ সালে OCCRP একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে পেগাসাস ইস্যুতে। সংসদ অধিবেশনের আগে মোদী সরকারকে আক্রমণ শানিয়ে সেই সব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল। কংগ্রেস সেই সব প্রতিবেদনকে হাতিয়ার করেছিল সংসদ অচল করতে। ২০২৩ সাল থেকে OCCRP আদানি ইস্যুতে ৫ থেকে ৭টি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বিশ্বে এত বহুজাতিক সংস্থা থাকতেও আদানির ওপরই ফোকাস করে থেকেছে তারা। এর আগে পুতিনের বিরুদ্ধে একই কাজ করেছিল তারা। এরপরই গোটা কংগ্রেস আদানি ইস্যুতে নড়েচড়ে বসে এবং OCCRP-র সেই সব প্রতিবেদনকে হাতিয়ার করে আদানি, প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং ভারতকে আক্রমণ শানিয়েছে। OCCRP ক্রমাগত কংগ্রেসকে নানান ইস্য়ুতে সমর্থন করে গিয়েছে। তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তাতেই স্পষ্ট। OCCRP বারবার হাতিয়ার তুলে দিয়েছে কংগ্রেসের হাতে, এবং সেটা ব্যবহার করে তারা বিজেপি এবং ভারতকে আক্রমণ করেছে।'