সংসদের বাদল অধিবেশনে সম্মুখসমরে নামল তৃণমূল কংগ্রেস–বিজেপি। বাংলায় এবার হেরেছে বিজেপি। পেয়েছে ১২টি আসন। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস ২৯টি আসন পেয়েছে। এমনকী গোটা দেশে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ২৪০ আসনে আটকে গিয়েছে। কারণ বিজেপি নেতাদের দম্ভ–অহংকার এবং মানুষের উপর নামিয়ে আনা হিংসা বরদাস্ত করেননি নাগরিকরা। এটাও একটা চু কিত কিত খেলা। এমন সব মন্তব্য করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সিনিয়র সাংসদ তথা বিশিষ্ট আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে চরম অস্বস্তি তৈরি হয় গেরুয়া শিবিরের নেতাদের। জবাবে তুমুল আক্রমণাত্মক মেজাজ দেখালেন বিজেপির সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।
এই দু’পক্ষের বাকযুদ্ধে সরগরম হয়ে ওঠে সংসদের অলিন্দ। আর পিছন ধেকে ধেয়ে আসে ধ্বনি ‘শেম’, ‘শেম’। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি সাংসদের–সহ প্রধানমন্ত্রীকে পর্যন্ত ছেড়ে কথা বলেননি। পাল্টা বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ আওয়াজ তোলেন, বাংলায় নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হতো যদি না সেটা দেখত নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী। এই কথা বলার কারণ হল, নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন শ্রীরামপুরের সাংসদ। নির্বাচন কমিশন বিজেপির হয়ে কাজ করেছে এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী বাংলার দু’জন মহিলার শ্লীলতাহানি করেছিলেন বলেই গ্রেফতার হন বলে সুর সপ্তমে তোলেন কল্যাণ।
আরও পড়ুন: যোগী রাজ্যের পুলিশের হাতে গ্রেফতার বাংলার বিজেপি নেতা, বাগদা থেকে পাকড়াও
সেখানে মহিলাদের উপর বাংলায় অত্যাচার করা হয় বলে সরব হন সৌমিত্র খাঁ। তিনিও বাংলার বিজেপি সাংসদ। কল্যাণের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন সংসদে। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেবেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু তিনি বুঝিয়ে দেন, তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতি এবং তুষ্টিকরণের সঙ্গে আপস করবেন না। তাই সংসদে সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘বাংলায় লোকসভা এবং বিধানসভা ছাড়া কোনও নির্বাচন হয় না। বাংলার একটা ট্র্যাডিশন হয়ে গিয়েছে—রাজ্যপালকে মানব না, রাষ্ট্রপতিকে মানব না ও আদালতকেও মানব না। কল্যাণ দা আমার সিনিয়র নেতা, যিনি নির্বাচন কমিশন খারাপ কাজ করেছে বলে অভিযোগ তুললেন। কিন্তু জেনে রাখুন, বাংলায় নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকলে কোনও নির্বাচন সম্ভব নয়।’
এছাড়া আরও বেশ কিছু আক্রমণ শাণিয়েছেন বিজেপির বিষ্ণুপুরের সাংসদ। সংসদের বাদল অধিবেশনে সাম্প্রতিক চোপড়ার ঘটনাও তুলে ধরেন সৌমিত্র। তাঁর বক্তব্য, ‘এই বাংলায় কোনও পঞ্চায়েত এবং পুরসভার নির্বাচন হয় না। বিজেপির ২০০ কর্মীকে খুন করা হয়েছে বাংলায়। ওখানে বিরোধী পক্ষের বলার অধিকার পর্যন্ত নেই। ওরা আমাদের কর্মীদের মেরেছে। এখানে তো বিরোধীদের ডাকা হয়। বাংলায় কোনও বৈঠকে, কোনও কর্মসূচিতে বিরোধীদের আমন্ত্রণ করা হয় না। এই নির্বাচনের পরও আক্রমণ নেমে এসেছে আমাদের উপর। কোচবিহারে এক মহিলাকে নগ্ন করে ছেড়েছে এরা। চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক বলছেন এটা মুসলিম রাষ্ট্র। তাই মহিলাদের পেটানো হবে। এরা কথা বলে মহিলাদের হয়ে।’