জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে এখন একটা প্রশ্ন জোর ঘুরপাক খাচ্ছে। সেটি হল– এবার স্পিকারের পদে বসবে কে? নানা গুঞ্জনের মধ্যে এখনও পর্যন্ত মনে করা হচ্ছে, ওম বিড়লাকেই লোকসভার স্পিকার পদে রেখে দেওয়া হবে। যদিও ওম বিড়লার দাবি, সব রাজনৈতিক দল মিলেই সেটা ঠিক করবে। সুতরাং এখন তিনিও হলফ করে বলতে পারছেন না স্পিকার পদ তাঁর কাছেই যাবে। এখন তো আর মোদী সরকার নয়। এখন এনডিএ সরকার। তাই শরিকদের মতামত এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার উপর শরিক দলগুলির পক্ষ থেকে যদি স্পিকার পদ দাবি করা হয় তাহলে তো আর কথাই নেই। এই প্রেক্ষাপটে বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন ওম বিড়লা।
এদিকে বহু বছর ধরে বিরোধীরা দাবি করে আসছেন ডেপুটি স্পিকারের পদ। যদিও সে কথা কানে তোলেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তখন অবশ্য একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার ছিল—মোদী সরকার। এবার বিরোধীরা অনেক বেশি শক্তিশালী। তার উপর গড়ে উঠেছে এনডিএ সরকার। বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তাই লোকসভায় এবার ‘ডেপুটি স্পিকার’ পদ আদায় করতে চায় তারা। আর তা যদি সফল হয়, তাহলে সম্মানীয় ওই পদ পেতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস বা সমাজবাদী পার্টি। কংগ্রেস এবার ৯৯ আসন জিতেছে বলে লোকসভায় বিরোধী দলনেতার পদ পাবে। তাই ডেপুটি স্পিকার পদটি ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অন্য শরিককে দিতে বাকিদের আপত্তি থাকবে না। কিন্তু স্পিকার নির্বাচন করতে রাষ্ট্রপতি নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্যদিকে আগামী ২৬ জুনের মধ্যে স্পিকার নির্বাচন করতে নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। তাই এটা নিয়ে কৌতূহল দেখা দিয়েছে জাতীয় রাজনীতিতে। তাই বিষয়টি জানতে সরাসরি প্রশ্ন করা হয় সাংসদ ওম বিড়লাকে। তিনি বলেন, ‘পরিবর্তন ঘটতে থাকা উচিত। তবে আমি কেউ নই এই বিষয়ে মন্তব্য করার জন্য। এই স্পিকার পদে কে বসবেন সেটা সিদ্ধান্ত নেবে সংসদে থাকা রাজনৈতিক দলগুলি।’ এই মন্তব্য থেকে স্পষ্ট তিনি নিজেও ধোঁয়াশার মধ্যেই রয়েছেন। তবে যদি তাঁকে আবার ওই পদে বহাল করা হয় তাহলে তিনি অস্বীকার করবেন না বলেই অনেকের মত। দ্বিতীয়বার লোকসভা নির্বাচনে জিতে এসেছেন ওম বিড়লা। তাই এমন ভাবনা সকলের।
এছাড়া এখন এনডিএ সরকারে রয়েছে টিডিপি এবং জেডিইউ। তাদের ভূমিকা কেমন হয় সেটাও দেখার বিষয়। স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, অর্থ এবং বিদেশ মন্ত্রকে কোনও পরিবর্তন হয়নি। সেক্ষেত্রে স্পিকারের পদেও কোনও পরিবর্তন হবে না বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। কোটা লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতে এসেছেন ওম বিড়লা। ২০ বছরে কোনও প্রথম কোনও স্পিকার দ্বিতীয়বার জিতে এসেছেন। সুতরাং তাঁর পাল্লা ভারী সেটা বোঝা যাচ্ছে। এবার বাদল অধিবেশন শুরু হতে চলেছে। তার আগে স্পিকার ঠিক করে ফেলা অত্যন্ত জরুরি। আগামী ২৪ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত চলবে বাদল অধিবেশন। তার আগেই ঠিক করতে হবে লোকসভার স্পিকার।