রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে ঘিরে ক্রমেই রাজনৈতিক পারদ চড়ছে। বিজেপি এবং তাদের শরিক দলের প্রস্তাবিত প্রার্থীর রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়া প্রায় নিশ্চিত হলেও এখনও প্রয়োজনীয় সংখ্যা জোগাড় করতে পারেনি বিজেপি। এদিকে বিজেপিকে ঠেকাতে বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে। বিজেপির কাছে যে পর্যাপ্ত সংখ্যা নেই, তা জানেন বিরোধীরা। আর তাই সম্মিলিত ভাবে একজনকে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়ে তাঁকে জেতাতে চাইছে কংগ্রেস, তৃণমূল, এনসিপির মতো দলগুলি। এই আবহে এবার বিজেপির কৌশল গ্রহণের দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কৌশল ঠিক করার অঙ্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও। দলের তরফে অন্য দলের সঙ্গে যোগাযোগ, সংলাপ এবং সমন্বয়ের সম্মুখভাগে থাকছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। তাঁর সঙ্গে থাকবেন বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্নাদ যোশী। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজ্যের বিজেপি ও এনডিএ-র মুখ্যমন্ত্রীদের ঘাড়েও দায়িত্ব থাকবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের। উল্লেখ্য, আগামী জুনের মাঝামাঝি সময় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই এ নিয়ে কৌশল তৈরি করতে শুরু করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। প্রার্থীদের নাম নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। একই সময়ে, এমন সব নন-এনডিএ দলকে খুঁজে বের করার কাজ চলছে যারা বিজেপিকে সাহায্য করতে প্রস্তুত হবে। মে মাস থেকে এসব দলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সংলাপ ও যোগাযোগের কাজ শুরু হবে।
সূত্রের খবর, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য বিজেপি যে কৌশলগত দল গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং অমিত শাহ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং লোকসভায় দলের কৌশল নির্ধারণের কেন্দ্রে থাকবেন। অন্যদিকে রাজ্যসভায় দলের কৌশল ঠিক করবেন বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। সংসদের উভয় কক্ষে সমন্বয়ের কাজ করবেন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দের মেয়াদ ২৪ জুলাই শেষ হবে এবং তার আগে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন শেষ হতে হবে। পাঁচ রাজ্যের ভোট মিটে যাওয়ার পর তাই এখন সব রাজনৈতিক দলেরই নজর সেদিকে। প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দেন সাংসদ–বিধায়কেরা। রাজ্যের জনসংখ্যার (১৯৭১) উপর ভিত্তি করে প্রতিটি বিধায়কের ভোটের মূল্য নির্ধারিত হয়। যেমন পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি বিধায়কের এক একটি ভোটের মূল্য ১৫১ করে। দেশে উত্তরপ্রদেশের বিধায়কদের ভোটের মূল্য সর্বাধিক – ২০৮। এদিকে ইলেক্টোরাল কলেজে একজন সাংসদের ভোটের মূল্য ৭০৮। এই আবহে পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের আগে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে মাত্র ০.০৫ শতাংশ পিছিয়ে ছিল। তবে সদ্য সমাপ্ত ভোটের পর বিজেপি ১.২ শতাংশ পিছিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য দরকার ৫ লক্ষ ৪৯ হাজার ৪৫২ ভোট। তবে সেই সংখ্যার থেকে কিছুটা দূরে বিজেপি।