কেরলে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের(এনডিএ) নির্বাচনী ইস্তেহারে 'লাভ জিহাদ' আইনের প্রতিশ্রুতি। সবরীমালার ঐতিহ্য রক্ষার আইনও আনার আশ্বাস। বুধবার ইস্তেহার প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর।
আগামী ৬ এপ্রিল কেরলে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে কেরলবাসীর মন পেতে মরিয়া এনডিএ। বুধবার প্রকাশিত ইস্তেহারে পড়ুয়াদের ল্যাপটপ দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারদের বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
প্রকাশ জাভড়েকর ইস্তেহারটিকে প্রগতিশীল এবং উন্নয়নমুখী বলে দাবি করেন। তাঁর কথায়, 'আমরা বিরোধীদের মতো মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিই না। আমাদের যেটা করার ক্ষমতা আছে, তারই প্রতিজ্ঞা করি। কেরলের এই অচলাবস্থা আমরা দূর করব।'
শুধু তাই নয়, আরও একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি এনডিএ-এর কেরল ম্যানিফেস্টোয়। গৃহহীনদের বিনামূল্যে বাড়ি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের সমস্যার দিকেও নজর দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও রয়েছে। পানীয় জল সরবরাহ ও রাজ্যের প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুত্ পরিষেবা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
ইস্তেহারে বলা হয়েছে, কোনও পরিবারের প্রধান উপার্জনকারী যদি অসুস্থতা বা অন্য কোনও কারণে কাজ হারান, সেক্ষেত্রে সেই পরিবারকে মাসিক ৫ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে।
রাজ্যের কোনও মন্দিরে সরকারি নিয়ন্ত্রণ রাখা হবে না বলে জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে যে, মন্দিরের দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে ভক্ত-অনুগামী ও পুজারিদের হাতে থাকবে। সবরীমালা মন্দিরের প্রাচীন রীতি-নীতিও রক্ষা করা হবে বলে জানানো হয়েছে ম্যানিফেস্টোয়। বছর তিনেক আগেই এই সবরীমালায় মহিলাদের প্রবেশাধিকারের প্রশ্নে উত্তাল হয় গোটা দেশ।
এছাড়া, দক্ষিণ ভারতে এই প্রথম লাভ জিহাদ আইন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি। হিন্দু মেয়েদের বিয়ের পর বলপূর্বক ধর্মান্তরিত করার বিরুদ্ধে আইন আনার কথা বলা হয়েছে।
কেরলে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মূল পরীক্ষার আগে একটি এলিজিবিলিটি টেস্ট হয়। ক্ষমতায় এলে সেই এলিজিবিলিটি টেস্ট তুলে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। অর্থাত্ সরাসরিই বসা যাবে মূল পরীক্ষায়।
অন্যদিকে কেরল নির্বাচনের আগে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের ইস্তেহারকে আমল দিতে নারাজ সেখানকার সিপিএম সরকার। সিপিআইএম নেতা এ অনন্তনের কথায়. 'এর আগে লোকসভা ভোটেও বিজেপি সবরীমালা নিয়ে বড় বড় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু প্রতিশ্রুতিই সার। গত ২ বছরে কিছুই করে উঠতে পারেনি।' ঐতিহ্য রক্ষাকারী আইন আনার আশ্বাসকে কটাক্ষ করেন তিনি। তাঁর কথায়. 'একটা স্কুলের শিশুও জানে যে ব্যাপারটা এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। এটা নিয়ে এখনই কোনও আইন কী করে আনবে?'