জে পি নাড্ডা সভাপতি সভাপতি হওয়ার ন'মাসের মাথায় কেন্দ্রীয় স্তরে বড়সড় রদবদল করল বিজেপি। প্রায় ৬০ শতাংশের মতো নয়া মুখ ঠাঁই পেয়েছেন। পাশাপাশি আগামী বছর বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করে পশ্চিমবঙ্গের তিনজনকে কেন্দ্রীয় স্তরের পদে রাখা হয়েছে।
অনেক পুরনো মুখ বাদ গেলেও সবথেকে বড় চমক অবশ্যই রাম মাধব। তাঁকে জাতীয় সাধারণ সচিবের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও রাজনৈতিক মহলের মতে, আগামী বছর অসমে বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে মাধবকে কেন্দ্রীয় স্তর থেকে সরানো হয়েছে, যাতে অসমে ভালোভাবে মনোনিবেশ করতে পারেন তিনি। এমনিতেই জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে সেই রাজ্য উত্তাল হয়েছিল। তার রেশ বিধানসভা ভোটে পড়লে বিজেপির চাপ যথেষ্ট বাড়বে।
রাম মাধব ছাড়া রাজ্যসভার সাংসদ সরোজ পান্ডে, মুরলীধর রাওকেও জাতীয় সাধারণ সচিবের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিবর্তে জাতীয় সাধারণ সচিবের পদ পেয়েছেন দুশান্ত কুমার গৌতম, ডি পুরাণ্ডেশ্বরী, সিটি রবি, তরুণ চুগ এবং দিলীপ সাইকিয়া (অসমের সাংসদ)। তাঁদের মধ্যে আগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জাতীয় সহ-সভাপতি ছিলেন দুশান্ত। তবে কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে জাতীয় সাধারণ সচিবের পদে রেখে দেওয়া হয়েছে। কৈলাসের মতোই জাতীয় সাধারণ সচিবের (সাংগঠনিক) পদে থাকছেন বি এল সন্তোষ। নাড্ডার নয়া টিমেও থাকছেন জাতীয় যুগ্মসচিব বি সতীশ, সৌদান সিং এবং শিব প্রকাশ।
২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় পীযূষ গোয়েল ঠাঁই পাওয়ার পর দীর্ঘদিন ফাঁকা ছিল জাতীয় কোষাধ্যক্ষের পদ। অবশেষে রাজেশ আগরওয়ালকে সেই পদে আনা হয়েছে। তারইমধ্যে সহ-সভাপতি পদ হাতছাড়া হয়েছে উমা ভারতী, প্রভাত ঝা, ওপি মাথুর, রেণু দেবী, বিনয় সাহাস্রাবুদ্ধে, অবনিশা রাই খান্নার মতো বর্ষীয়ান নেতাদের। পরিবর্তে মুকুল রায়, ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস, সাংসদ রেখা বর্মা, ছত্তিশগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রামন সিং, রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা সিং রাজে, ওড়িশার নেতা জয় পন্ডারা জাতীয় সহ-সভাপতি পদে জায়গা করে নিয়েছেন।
আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় কমিটিতে বাংলা বিজেপি নেতাদের কিছুটা গুরুত্ব বাড়ানো হয়েছে। ‘মানভঞ্জনে’ মুকুলের পদোন্নতি করা হয়েছে। জাতীয় মুখপাত্রের দলে আনা হয়েছে দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু সিং বিস্তকে। জাতীয় সচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন অনুপম হাজরা। তবে রাজনৈতিক মহলের মত, কেন্দ্রীয় কমিটিতে মুকুলের প্রমোশনে স্পষ্ট হয়ে গেল যে আগামী বছর বিধানসভা ভোটে রাজ্যে বিজেপির লাগাম থাকছে দিলীপ ঘোষের হাতেই। আর পদোন্নতি করে যেমন মুকুলের ‘মানভঞ্জন’-ও হল, তেমনই রাজ্য বিজেপিতে ‘গোষ্ঠীকোন্দল’ কিছুটা কমবে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
মুকুলের মতো পদোন্নতি হয়েছে তেজস্বী সূর্যেরও। সুবক্তা হিসেবে পরিচিত কর্নাটকের সাংসদকে যুব মোর্চার সভাপতি করা হয়েছে। যে পদে আগে ছিলেন পুনম মহাজন।