সামনেই গুজরাত ভোট। তারপর বছর ঘুরলেই একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তারপর ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটের ঢাকে কাঠি পড়তে চলেছে। তার আগে বিজেপি নিজের পিচ প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। বিজেপির পাখির চোখ এবার পসমন্দা মুসলিম সম্প্রদায়। সদ্য তেলাঙ্গানায় দলীয় সভা থেকে এই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে আরও বেশি করে দলীয় কর্মীদের পৌঁছানোর কথা বলেছেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী। তবে প্রশ্ন উঠতেই পারে পসমন্দা মুসলিম সম্প্রদায়কে ঘিরে কেন ঘুঁটি সাজাচ্ছে বিজেপি? দেখে নেওয়া যাক কয়েকটি তথ্য।
যোগীগড়ের ভোটব্যাঙ্কের অঙ্ক
সদ্য উত্তরপ্রদেশের ভোটে যোগী আদিত্যনাথের শিবিরের পক্ষে মুসলিম ভোট পড়েছে ৮ শতাংশ। পার্টি মনে করছে অল্প সংখ্যক মুসলিম ভোট বিজেপির ঝোলায় উত্তরপ্রদেশে যা এসেছে তাতে পসমন্দা মুসলিম সম্প্রদায়ই বেশি। যে সম্প্রদায়ের ভোটব্যাঙ্কে আরও বেশি নির্ভর করতে চাইছে গেরুয়া শিবির। পসমন্দা সম্প্রদায়ের বিশেষজ্ঞ ফায়াজ আহমেদ ফইজি বলছেন, ‘উত্তর প্রদেশে আশরফ মুসলিমজের সংখ্যা ১০ শতাংশ, আর পসমন্দা মুসলিমরা ৯০ শতাংশ। ’ এই অঙ্কের নিরিখে বিজেপির লোকসভা ভোটের ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশ যখন বড় ফ্যাক্টর তখন, পসমন্দা ভোটব্যাঙ্ক নিঃসন্দেহে বিজেপির কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মোরাদাবাদ, আলিগড়, মেরঠ এমনকি মোদীর সংসদীয় ক্ষেত্র বারাণসীতেও এই মুসলিমদের ভোটব্যাঙ্ক অনেকটাই।
কারা পসমন্দা মুসলিম?
বিজেপি নেতৃত্ব বলছে, যাঁরা অতীতে হিন্দু ছিলেন আর পরবর্তীকালে মুসলিম হয়েছেন তাঁরাই পসমন্দা মুসলিম। ফায়াজ আহমেদ ফৈজি বলছেন, অশরফ মুসলিমরা উচ্চ বর্গীয় বলে বিবেচিত হন, সেখানে পসমন্দারা সেই স্থান পাননা। আর এই জায়গা থেকে বিজেপি জনভিত্তি বাড়িয়ে নিতে এই পসমন্দা মুসলিমদেরই পাখির চোখ করেছে।
উত্তরপ্রদেশে জমি পোক্ত করার লড়াই
উল্লেখ্য, সদ্য উত্তরপ্রদেশে রামপুর ও অজমগড়ে লোকসভা ভোটের উপনির্বাচনে সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে বিজেপি জিতলেও ঝুলি বিশাল সংখ্যক মুসলিম ভোট আসেনি। তবে বিরোধী সমাজবাদী পার্টিও সেই মুসলিম ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসাতে পারেনি। সেই জায়গা থেকে বিজেপির সম্ভাবনা রয়েছে, সমাজবাদী পার্টির মুসলিম ভোটব্যঙ্কে থাবা বসানো। বলছেন বহু বিশেষজ্ঞ।
লক্ষ্যে লোকসভা ও পসমন্দা ভোটব্যাঙ্ক
জুলাই থেকেই বিজেপির সংখ্যালঘু সেল পসমন্দা মুসলিম ভোটব্যাঙ্ককে কাছে টানতে শিবির শুরু করছে। প্রসঙ্গত, মনে করা হচ্ছে, পসমন্দা মুসলিমদের কাছে টেনে বিজেপি জনভিত্তি যেমন বাড়াতে চাইছে তেমনই তারা চাইছে বিরোধীদের মুসলিম ভোটে থাবা বসাতে। ফলে মোদীর সবকা সাথ সবকা বিকাশ নীতি এবার বাস্তবের মাটিতে উজ্জ্বল করতে তৎপর বিজেপি।