গতরাতে গ্রেফতার করা হয় দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াকে। অবৈধ আবগারী নীতি মামলায় সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করে গতকাল। এই আবহে আজকে দেশ জুড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করার কথা রয়েছে আম আদমি পার্টির। এর আগে গতকাল মণীশ সিসোদিয়া সিবিআই দফতরে প্রবেশ করার আগেই 'ভবিষ্যদ্বাণী' করেছিলেন যে তিনি '৭-৮ মাসের জন্য জেলে যাবেন।' দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির জাতীয় আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়ালও এর আগে দাবি করেছিলেন যে, সিবিআই-এ থাকা তাঁর 'সূত্র' মারফত তিনি জানতে পেরেছেন যে সিসোদিয়াকে গ্রেফতার করা হবে। সেই 'ভবিষ্যদ্বাণী' সত্যি প্রমাণিত করে গতকাল গ্রেফতার হন সিসোদিয়া। আজ তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে। এই আবহে এবার আম আদমি পার্টিকে তোপ দাগল বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের কটাক্ষ, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট করে আইনের হাত থেকে বাঁচবে না আম আদমি পার্টি।
উল্লেখ্য, রবিবার সকাল থেকে প্রায় ৮ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর সিসোদিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে সিবিআই দফতরে দলীয় সমর্থকদের সঙ্গে দীর্ঘ রোড শো করেছিলেন সিসোদিয়া। এই আবহে বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, 'মণীশ সিসোদিয়া এবং অন্যান্য আম আদমি পার্টি নেতারা কখনও এটা ব্যাখ্যা করেননি যে কেন তাঁরা আচমকা আবগারি নীতিটি প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন... দিল্লির আবগারি নীতিটি মন্ত্রীদের গ্রুপে পাঠানোর আগে মদ-ঠিকাদার 'বন্ধুদের' কাছে ফাঁস করেছিল আম আদমি পার্টি। আম আদমি পার্টি দিল্লিতে মদের সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিয়েছে এবং নির্বাচনী প্রচারে মদের টাকা হারিয়েছে। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট করে আইনের হাত থেকে আর বাঁচতে পারবে না আম আদমি পার্টি।'
উল্লেখ্য, ২০২১-২২ সালে দিল্লির নতুন আবগারি নীতি তৈরির সময় মণীশ সিসোদিয়া দুর্নীতি করেছিলেন বলে অভিযোগ সিবিআই-এর। সিবিআই জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে সন্তোষজনক উত্তর না-মেলায় রবিবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, রবিবার সকাল ১১টা ১২ মিনিটে সিবিআই দফতরে যান সিসোদিয়া। এদিকে আম আদমি পার্টির দাবি, সিসোদিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে। এই ইস্যুতে তাঁর ডেপুটির পাশে দাঁড়িয়েছেন আপ সুপ্রিমো তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও।
এর আগে গত জানুয়ারি মাসে দীর্ঘক্ষণ 'তল্লাশি' চালিয়ে মণীশ সিসোদিয়ার অফিস থেকে একটি কম্পিউটার বাজেয়াপ্ত করেছিল সিবিআই। সিবিআই-এর একটি তদন্তকারী দল দিল্লির সচিবালয়ে উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়ার অফিসে গিয়েছিল। তবে সেটিকে 'অভিযান' বলে আখ্যা দিতে অস্বীকার করে সিবিআই। তদন্তকারীদের দাবি, বাজেয়াপ্ত কম্পিউটার থেকে আবগারি দুর্নীতির সাথে সম্পর্কিত বেশ কিছু রেকর্ড হাতে আসে। উল্লেখ্য, দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনা সিসোদিয়ার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছিলেন। মুখ্য সচিবের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতেই এই সুপারিশ করেন ভিকে সাক্সেনা। দিল্লির মুখ্য সচিবের রিপোর্টে আবগারি নীতিতে উপমুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই আবহে সিসোদিয়ার বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। সিসোদিয়ার পাশাপাশি দিল্লির তৎকালীন আবগারি কমিশনার আরভ গোপী কৃষ্ণের বাড়িতেও অভিযান চালিয়েছিল সিবিআই। উল্লেখ্য, আবগারি দপ্তর সিসোদিয়ার অধীনে।