কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে ২০২২ সালের সবচেয়ে বড় ভোচ মহারণের। নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে যে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব, মনিপুর, গোয়ায় ভোটের নির্ঘণ্ট। সেই মতো, প্রার্থী তালিকা সাজিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দল কুর্সির যুদ্ধে নামতে তোড়জোড় করছে। এদিকে, আসন্ন ২০২২ বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে বিজেপি নিয়েছে নয়া স্ট্র্যাটেজি।
'মেধা আর পারফরম্যান্স' ই শেষ কথা বলবে বিজেপির টিকিটের জন্য দাবিদারদের ক্ষেত্রে। পদ্মশিবিরের এর প্রথম সারির নেতার সূত্রে এই খবর উঠে আসছে। ২০২২ বিধানসভা নির্বাচনে পাঁচ রাজ্যে বিজেপির প্রার্থী তালিকা কেমন হতে পারে, তা নিয়ে যখন জোর জল্পনা রাজনৈতিক শিবিরে, তখনই উঠে এল নাড্ডা শিবিরের এই নয়া অঙ্ক। জানা গিয়েছে, আসন্ন বিধানসভা ভোটে পাঁচ রাজ্যের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নয়া স্ট্র্যটেজিতে ভর করে ভোট-মহারণের প্রস্তুতি সারছে বিজেপি। পার্টি সূত্রের খবর, একই পরিবারের একাধিক জনকে এবার টিকিট দেওয়া থেকে বিরত থাকবে পদ্মক্যাম্প। এছাড়াও যাঁরা বর্তমানে সাংসদ তাঁদের ফের বিধায়ক পদের প্রার্থী হয়ে ভোটে দাঁড়াতে দিতে চাইছে না অমিত শাহের দল। মূলত, বিজেপির হাইকমান্ড স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, 'জানা শোনা'-র ওপর নির্ভর করে পার্টির প্রার্থীপদের টিকিট মিলবে না।
জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ, মনিপুর,গোয়া,পঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বহু বিজেপি নেতাই হাইকমান্ডের কাছে দরবার করেছেন তাঁদের ছেলে মেয়ে কিম্বা পরিজন, চেনা পরিচিতদের ভোটের টিকিট দেওয়ার জন্য। উদাহরণ স্বরূপ উঠে আসছে গোয়ার ঘটনা। সেখানে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পার্রিকারের ছেলে উৎপলের প্রার্থীপদ নিয়ে চরম গুঞ্জন ও জল্পনা রয়েছে। উৎপলপন্থীদের দাবি তাঁকে পানাজি থেকে ভোটে লড়ার টিকিট দেওয়া হোক। এদিকে, উত্তরপ্রদেশে ভোটের পিচ প্রস্তুত হতেই বিজেপি ছেড়ে যেমন একাধিক নেতা সমাজবাদী পার্টিতে অখিলেশ ক্যাম্পের হাত ধরেছেম, তেমনই আবার অখিলেশের ঘরের সদস্যও বিজেপিতে আসতে পারেন বলে জোর গুঞ্জন যোগীগড়ে। অখিলেশের ভ্রাতবধূ তথা সমাজবাদী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মুলায়মের পুত্রবধূ অপর্ণা যাদব বিজেপিতে আসতে পারেন বলে খবর। তবে বিজেপি সূত্রের খবর, অপর্ণার যোগদান ঘিরে কোনও প্রার্থীপদের লোভের হাতছানি নেই। যদি অপর্ণা যাদব বিজেপিতে যোগ দেন তাহলে তাঁর বিধানসভা আসন কী হতে পারে বা তাঁর প্রার্থীপদ ঘিরে সিদ্ধান্ত পরে নেবে গেরুয়া শিবিরের উর্ধতন শিবির। এমনই দাবি পদ্মক্যাম্পের এক নেতার।
উল্লেখ্য, সদ্য বিজেপি ছেড়েছেন দলের তিন হেভিওয়েট মন্ত্রী। তাঁদের মধ্যে স্বামীপ্রসাদ সহ একাধিক বিধায়ক দলিত সমাজের প্রতিনিধি। গঙ্গাপাড়ের রাজনীতিতে জোর জল্পনা যে, এই দলত্যাগে প্রভাব পড়তে পারে বিজেপির দলিত ভোটব্যাঙ্কে। তবে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি আশা দেখছে ৪০৩ এর মধ্যে ৩০০ আসন জয় করে নেওয়ার। দলের নেতাদের মধ্যে সদ্য ঘটে যাওয়া দলত্যা বিজেপির ভোটব্যাঙ্কে এক ফোঁটা আঁচড় কাটতে পারবে না। শোনা যাচ্ছে, উত্তরপ্রদেশের দোলাচলের রাজনীতির মধ্যে ভোটের আগে পিচ দেখে নিতে সম্ভবত সেখানে আসতে পারেন বিজেপির চাণক্য অমিত শাহ। আর সেই সময় পার্টি নেতাদের সঙ্গে যে তাঁর হাইভোল্টেজ বৈঠক সম্পন্ন হতে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য। আর সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছে গোবলয়ের গেরুয়া রাজনীতিও।