আদানির বিরুদ্ধে শেয়ার দর হেরফের করার অভিযোগের কোনও ভিত্তি এখনও খুঁজে পায়নি সুপ্রিম কোর্টের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি। এই কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপির তরফে এবার তোপ দাগা হল রাহুল গান্ধীকে নিশানা করে। সুপ্রিম কমিটির রিপোর্টের স্ক্রিনশট পোস্ট করে এদিন অমিত মালব্য বলেন, 'রাহুল গান্ধীর স্পিচরাইটারদের কাজ বেড়ে গেল। এখন নতুন নতুন ভিত্তিহীন অভিযোগ খুঁজে বের করতে হবে তাদের।' উল্লেখ্য, বিভিন্ন সময়ে আদানির নাম করে বিজেপিকে তোপ দেগে থাকেন রাহুল গান্ধী। হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার পর সেই আক্রমণের ঝাঁঝ আরও বাড়িয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। দাবি তুলেছিলেন, আদানি গোষ্ঠীতে বিনিয়োগ করা ২০ হাজার কোটি টাকার উৎস প্রকাশ্যে আনতে হবে। সংসদে মোদীর সঙ্গে আদানির ছবি দেখিয়ে নানান অভিযোগ করেছিলেন রাহুল। পরে সাংসদপদ খারিজ হওয়ার পর অভিযোগ করেছিলেন, আদানি ইস্যুতে সংসদে মুখ খোলার জেরেই তাঁর পদ খারিজ করা হয়। এই আবহে এবার বিজেপির তরফে পালটা তোপ দাগা হল রাগার উদ্দেশে।
এদিন অমিত মালব্য টুইটে লেখেন, ‘চৌকিদার চোর হ্যা স্লোগানের জন্য ভারতের জনগণ রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেসকে ডগহাউজে পাঠিয়েছিলেন। রাফাল নিয়ে ভিত্তিহীন প্রচার চালিয়েছিলেন রাহুল। এর জেরে ভারতের বায়ুসেনার আধুনিকীকরণের প্রক্রিয়া সংকটের মুখে পড়েছিল। আর এখন আদানি ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি জানিয়ে দিল যে সেবির থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং অন্যান্য তথ্য খতিয়ে দেখে তারা আদানিদের জালিয়াতির কোনও প্রমাণ পায়নি। নিয়ামক সংস্থার কোনও গলদও নেই এই ঘটনায়। রাহুল গান্ধীর বক্তৃতা যাঁরা লেখেন, তাঁদের এখন আরও অদ্ভুত কিছু সামনে নিয়ে আসতে হবে। তাঁর মিথ্যার যন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে হবে।’
উল্লেখ্য, আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশের পরই তুলকালাম কাণ্ড হয়েছিল দেশের বাণিজ্য ক্ষেত্রে। শেয়ার বাজারে ধস নেমেছিল আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে। এই পরিস্থিতিতে আদানিদের মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। এই আবহে সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে দিয়েছিল। আজ সেই কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ্যে এল। প্রসঙ্গত, হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, বিদেশে বেনামি সংস্থা খুলে নিজেদের শেয়ার নিজেরাই কিনে নিত আদানি গোষ্ঠী। এভাবে বাজারে ভুয়ো চাহিদা সৃষ্টি করে শেয়ারের দাম চড়ানো হত। যদিও এই দাবি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে আদানি গোষ্ঠী। তবে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়টি গড়িয়ে শীর্ষ আদালতের দরবারে। এই আবহে সুপ্রিম কমিটি জানায়, এখনও পর্যন্ত আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ারের দাম হেরফের করার কোনও প্রমাণ মেলেনি। এছাড়া একটি নির্দিষ্ট কোনও পার্টির মাধ্যমে একাধিকবার ভুয়ো ট্রেডিং বা ওয়াশ ট্রেডের কোনও প্যাটার্ন পাওয়া যায়নি। ব্যবসায় জালিয়াতিরও কোনও সুসংগত প্যাটার্ন প্রকাশ্যে আসেনি। সেবির তথ্য এবং প্রাথমিক আরও তথ্য খতিয়ে দেখে আপাতত এই উপসংহারেই পৌঁছেছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। এই প্রাথমিক রিপোর্টটি গত ৬ মে জমা দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।