বাংলাদেশে কোটা-বিরোধী আন্দোলন নিয়ে তদন্ত করতে বিচারবিভাগীয় কমিশন গঠন করা হল। রবিবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে তথা প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও গণজ্ঞাপন বিষয়ক উপদেষ্টা সাজিব ওয়াজেদ জয় জানিয়েছেন, কোটা-বিরোধী আন্দোলনে যাঁদের যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তের জন্য হাইকোর্টের বিচারপতির নেতৃত্বে বিচারবিভাগীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেছেন, শান্তিপূর্ণভাবে পড়ুয়াদের যে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়েছিল, সেটাকে হিংসাত্মক আন্দোলনে পরিণত করেছে বিরোধী দল বিএনপি এবং জামাত-ই-ইসলামি। নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে হিংসার পথ অবলম্বন করেছে। গত কয়েকদিনে বাংলাদেশে যে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে, সেটার সঙ্গে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও গণজ্ঞাপন বিষয়ক উপদেষ্টা।
হাইকোর্টের রায়, বিক্ষোভ, হাসিনা সরকার ও সুপ্রিম কোর্ট
প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এমন একটা দিনে সেই মন্তব্য করেছেন, যেদিন হাইকোর্টের রায় খারিজ করে দিয়েছে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট। গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ বাতিলের সিদ্ধান্তকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছিল হাইকোর্ট। পরদিন থেকেই পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ৯ জুন হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল হাসিনা সরকার। তারইমধ্যে ১ জুলাই আন্দোলন আরও তীব্র হয়। ছড়িয়ে পড়ে হিংসা।
তারইমধ্যে রবিবার হাইকোর্টের রায় খারিজ করে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে যে এবার থেকে সাত শতাংশ সংরক্ষণ থাকবে। আগে যেটা ছিল ৫৬ শতাংশ। সেই রায়ের পরই প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও গণজ্ঞাপন বিষয়ক উপদেষ্টা জানান, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল হাসিনা সরকারই। দ্রুত আবেদন করা হয়েছিল। যে রায় রবিবার খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
সাজিবের নিশানায় বিএনপি ও জামাত
প্রধানমন্ত্রীর ছেলে জানিয়েছেন যে শান্তিপূর্ণভাবেই পড়ুয়াদের বিক্ষোভ চলছিল। কোনও হিংসা ছড়ায়নি। কিন্তু বিএনপি এবং জামাতের কারণে হিংসাত্মক রূপ নেয় আন্দোলন। বিক্ষোভকারীরা নিজেরাও সেই বিষয়টি জানিয়েছেন। পড়ুয়ারা সাফ জানিয়েছেন যে তাঁরা কোনওরকম হিংসা ছড়াচ্ছেন না। কিন্তু জামাত ও বিএনপির লোকজন ভীরুদের মতো হিংসার আশ্রয় নিয়েছে। আক্রমণ চালিয়েছে সুরক্ষা বাহিনীর সদস্য, সাংবাদিক, সরকারি আধিকারিকের উপরে। ভাঙচুর চালিয়েছে।
বাংলাদেশে পড়ুয়া বিক্ষোভে কতজনের মৃত্যু হয়েছে?
সংবাদসংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতাল এবং পুলিশের তরফে যে খবর পাওয়া গিয়েছে, তাতে গত মঙ্গলবার থেকে কোটা-বিরোধী আন্দোলনে মোট ১৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারইমধ্যে অনিকা নামে এক তরুণী বলেন, ‘আমার বাবা বিক্ষোভকারী ছিল না তো।’