দীর্ঘ ১৩ বছর পর বাংলাদেশের ফিরলেন বিএনপি-র ভাইস চেয়ারম্য়ান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪) স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ২০ মিনিট নাগাদ তাঁর বিমান ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দাবি করা হয়েছে, প্রবীণ এই বিএনপি নেতাকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরের বাইরে ভিড় জমায় অসংখ্য মানুষ।
সংবাদমাধ্যমের দাবি, দলমত নির্বিশেষে তাঁকে বাংলাদেশের মাটিতে স্বাগত জানাতে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার বিএনপি শাখার প্রতিনিধি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রনেতা-সহ বিভিন্ন পেশা ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এদিন বিমানবন্দরের বাইরে পৌঁছে যান। এই কারণেই এদিন বিমানবন্দরের বাইরে লক্ষাধিক মানুষের ঢল নামে বলেও বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমগুলিতে দাবি করা হচ্ছে।
আরও জানা গিয়েছে, শনিবার সৌদি আরব থেকে সৌদি এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ঢাকা পৌঁছন তিনি। স্বদেশে ফিরেই দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে গিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কায়কোবাদ। সূত্রের দাবি, এদিন মুরাদনগরও যাবেন তিনি। সেখানে তাঁর বাবা-মায়ের কবর রয়েছে। সেখানে তাঁদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করবেন।
প্রসঙ্গত, অতীতে কুমিল্লা-৩ মুরাদনগর আসন থেকে পাঁচবার সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন কায়কোবাদ। তাঁর জনভিত্তিও বিপুল। যে কারণে একাধিকবার নির্বাচনের ময়দানে প্রতিপক্ষদের লক্ষাধিক ভোটে হারিয়েছেন তিনি।
যেমন - ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনকে ১ লাখ ৭ হাজার ৫১১ ভোটে পরাজিত করেন কায়কোবাদ।
এর পরবর্তীতে, ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিএনপির হয়ে একই আসনে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে ১ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৬ ভোটে পরাজিত করে সাংসদ নির্বাচিত হন কায়কোবাদ।
বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, সেদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে কায়কোবাদের বিরুদ্ধে মিথ্য়া মামলা রুজু করা হয়েছিল। তার ফলে দেশ ছাড়তে হয় তাঁকে।
কিন্তু, হাসিনা সরকারের পতনের পর সবকিছুই বদলাতে শুরু করেছে। কায়কোবাদও তাঁর বিরুদ্ধে চলা সমস্ত মামলা থেকে অব্য়াহতি পেয়েছেন। আর সেই কারণেই ১৩ বছর পর দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
এখন দেখার, দেশে ফেরার পর এই প্রবীণ রাজনীতিক ফের একবার প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন কিনা। তথ্যাভিজ্ঞ মহল বলছে, কায়কোবাদ ফেরায় নিঃসন্দেহে বিএনপি-র হাত শক্ত হবে।
কিন্তু, সেক্ষেত্রে ইউনুস প্রশাসনের অবস্থান কী হবে? কারণ, ইতিমধ্যেই দ্রুত নির্বাচন করানো নিয়ে ইউনুস প্রশাসনের সঙ্গে বিএনপি-র আকচাআকচি শুরু হয়ে গিয়েছে। কায়কোবাদের উপস্থিতিতে তা আরও বাড়ে কিনা, আপাতত সেদিকেই নজর রয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলের।