দিনকয়েক আগেই উত্তরপ্রদেশের গঙ্গায় ভেসে উঠেছিল শতাধিক মৃতদেহ। এবার সেই উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ে বালির নীচ থেকে উদ্ধার হল একাধিক মৃতদেহ। ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
জেলাশাসক রবীন্দর কুমার দাবি করেছেন, নদী থেকে বেশ খানিকটা দূরে বালির মধ্যে দেহগুলি পোঁতা ছিল। তিনি বলেন, ‘নদী থেকে অনেকটা দূরে দেহগুলি মাটিতে পোঁতা ছিল। অন্যান্য জায়গায় আরও মৃতদেহ আছে কিনা, তা দেখা হচ্ছে। আমি একটি দলকে তদন্ত করতে বলেছি। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গত কয়েকদিন ধরে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য উত্তরপ্রদেশের গঙ্গায় শতাধিক মৃতদেহ ভাসতে দেখা যায়। প্রাথমিকভাবে অনুমান, ওই ব্যক্তিদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু নিয়মমাফিক সৎকারের পরিবর্তে দেহগুলি গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। একাংশের আবার অভিযোগ, মৃতের সংখ্যা ধামাচাপা দিতে জেনেবুঝেই সেই কাজ করা হয়েছে। যদিও সেই অভিযোগ এখনও প্রমাণিত হয়নি। তবে ইতিমধ্যে বিহারে মৃতদেহ ভেসে উঠেছে। বিহারের মন্ত্রী সঞ্জয় কুমার ঝা দাবি করেছেন, বক্সার থেকে ৭১ টি মৃতদেহ উজ্ঝার করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ-বিহার সীমান্ত লাগোয়া রানিঘাটের কাছে সৎকার করা হয়েছে।
তবে শুধু বিহার নয়, বাংলায় মৃতদেহ ভেসে আসতে পারে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করছে। তাই আগেভাগেই তৎপর হয়েছে বাংলা সরকার। পুলিশ এবং জেলা প্রশাসনের তরফে নজরদারি শুরুর পাশাপাশি ইতিমধ্যে নবান্নের তরফে জেলায় নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। নবান্নের আশঙ্কা, বিহার এবং ঝাড়খণ্ড হয়ে সেই মৃতদেহগুলি পশ্চিমবঙ্গের গঙ্গায় চলে আসতে পারে। সেজন্য রাজ্যে গঙ্গার প্রথম এন্ট্রি পয়েন্ট মালদহের মানিকচক ঘাটে কড়া নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেখানে গঙ্গা প্রায় এক কিলোমিটার চওড়া। ইতিমধ্যে নজরদারি চালানোও শুরু হয়ে গিয়েছে। মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্রকে একটি ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ পাঠিয়েছে নবান্ন। তাতে জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের সীমানায় কোনও মৃতদেহ ভেসে আসছে কিনা, সে বিষয়ে ক্রমাগত নজরদারির জন্য জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। আগেভাগেই নৌকা, বাঁশ-সহ মৃতদেহ উদ্ধারের বিভিন্ন সরঞ্জাম প্রস্তুত থাকতে হবে। কোনও দেহ উদ্ধার করা গেলে নির্দিষ্ট জায়গায় সসম্মানে সৎকারের ব্যবস্থা করে রাখারও নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। ফরাক্কা ব্যারেজ-সহ অন্যান্য যে জেলাগুলির উপর দিয়ে গঙ্গা বয়ে গিয়েছে সেগুলিকেও সতর্ক করা হয়েছে। তবে নবান্ন স্পষ্ট করে দিয়েছে, কোনওভাবেই গঙ্গার এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে মৃতদের পশ্চিমবঙ্গের ভিতর থেকে মৃতদেহগুলি ভেসে আসতে পারে।