গতবছরে দিল্লিতে শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডে তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ। বুধবার মহারাষ্ট্রের থানেতে সেই স্মৃতি ফিরে এল আরও একবার। নিজের লিভ-ইন পার্টনারকে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে বাড়িতেই রেখে দিয়েছিল এক ব্যক্তি। শেষ পর্যন্ত গতকাল সেই ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, মৃত লিভ-ইন পার্টনারের নাম সরস্বতী বৈদ্য। তাঁর বয়স ছিল ৩৬ বছর। তিনি ৫৬ বছর বয়সি মনোজ সাহানির সঙ্গে থাকতেন থানের এক আবাসবনে। বিগত তিনবছর ধরে সেই একই আবাসনে ভাড়া থাকতেন সেই দম্পতি। নয়া নগর পুলিশ থানার অন্তর্গত ছিল সেই আবাসন। বেশ কিছুদিন ধরেই সরস্বতীকে দেখতে পাচ্ছিলেন না প্রতিবেশীরা। এদিকে তাদের ফ্ল্যাট থেকে বিশ্রী দুর্গন্ধ পাচ্ছিলেন তারা। শেষে থাকতে না পেরে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রাই। পুলিশ এসে দেখে, সরস্বতীকে খুন করা হয়েছে।
তদন্তকারীরা ফ্ল্যাটে ঢউকে দেখেন এক মহিলার দেহ কেটে রাখা আছে সেখানে। সেই দেহ পচতে শুরু করেছিল। তাই দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল। জানা যায়, যার দেহ সেই ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়, তিনি সেখানকারই বাসিন্দা। নাম সরস্বতী বৈদ্য। এরপরই সরস্বতীকে খুন করার অভিযোগে তার পার্টনার মনোজ সাহানিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, মনোজ এবং সরস্বতী এই ফ্ল্যাটে বিগত তিনবছর ধরে ভাড়া থাকতেন। এদিকে কেন নিজের প্রেমিকাকে মনোজ খুন করেছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশের তদন্তকারীরা ধৃত ব্যক্তিকে জেরা করছেন এবং এই ঘটনার যাবতীয় তথ্য জানার চেষ্টা করছেন।
জানা গিয়েছে, পুলিশ আবাসনের সাততলায় অবস্থাত মনোজদের ফ্ল্যাটে পৌঁছায় গতকাল। সেখানে গিয়ে তারা দেখতে পায় একটি মহিলার মৃতদেহ পচাগলা অবস্থায় আছে সেখানে। বিশ্রী দুর্গন্ধ সেখানে। মৃতদেহের বেশ কয়েক টুকরো করা হয়েছে। মুম্বইয়ের ডেপুটি কমিশনার জয়ন্ত বাজবেলে জানান, খুবই নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে সেই মহিলাকে। তবে তিনি জানান, খুনের কারণ এখনও জানা যায়নি। তদন্তকারীরা তথ্য সংগ্রহ করছেন বলে জনান ডিসিপি। তিনি বলেন, 'পরিস্থিতি গভীরভাবে উদ্বেগজনক। আমরা শ্রীমতি বৈদ্যের জন্য ন্যায়বিচার খুঁজে পেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা জনসাধারণকে আমাদের তদন্তে সহায়তা করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। এই কেস সংক্রান্ত যেকোনও তথ্য যদি তাদের কাছে থেকে থাকে, তাহলে যেন তারা পুলিশকে তা জানায়।' উল্লেখ্য, এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই দিল্লির শ্রদ্ধাকাণ্ডের সঙ্গে এর তুলনা শুরু হয়। প্রসঙ্গত, শ্রদ্ধাকে দিল্লিতে খুন করা হলেও তিনিও মুম্বইয়েরই বাসিন্দা ছিলেন।