বিবাহিত মহিলাকে যদি বাসন মাজা, ঘর মোছার মতো গৃহস্থালির কাজ করতে বলা হয়, তার মানে এই না যা তার সঙ্গে পরিচারিকার মতো আচরণ করা হচ্ছে। এমনই পর্যবেক্ষণ করল বম্বে হাই কোর্ট। উচ্চ আদালত আরও পর্যবেক্ষণ করে যে, স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির কীর্তির বর্ণনা ছাড়া এটা নির্ধারণ যাবে না যে তারা বধূর প্রতি নিষ্ঠুরতা দেখিয়েছেন কি না। উচ্চ আদালত বলে, ‘যদি একজন বিবাহিত মহিলাকে পরিবারের প্রয়োজনে গৃহস্থালির কাজ করতে বলা হয়, তবে এটা বলা যাবে না যে তার সঙ্গে একজন পরিচারিকার মতো আচরণ করা হচ্ছে। যদি তার গৃহস্থালীর কাজকর্ম করার ইচ্ছা না থাকে, তবে তার সেটা বিয়ের আগে বলা উচিত ছিল। এতে বর-কনে নিজেরাই নিজেদের বিবাহ সম্পর্কে পুনর্বিবেচনা করতে পারত। যদি এটা বিয়ের পরে হয়, তবে এই জাতীয় সমস্যা নিজেদের মধ্যে কথা বলে সমাধান করা উচিত ছিল।’
বম্বে হাই কোর্টের ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চের বিচারপতি রাজেশ এস পাতিল এবং বিচারপতি বিভা কঙ্কনওয়াড়ির ডিভিশন বেঞ্চে গার্হস্থ্য হিংসার একটি মামলার শুনানি হচ্ছিল। এক মহিলা তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে সিআরপিসির ৪৮২ নং ধারার অধীনে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই এফআইআর খারিজ করার আবেদন জানিয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয় অভিযুক্ত স্বামী। সেই মামলার শুনানির সময়ই বড় পর্যবেক্ষণ করে উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ।
অভিযোগকারী স্ত্রীর এফআইআর অনুযায়ী, বিয়ের পর এক মাস তাঁর সঙ্গে ঠিকঠাক আচরণ করা হয় এবং তারপরই তাঁর সঙ্গে দাসীর মতো আচরণ শুরু করে শ্বশুরবাড়ির লোকরা। তাঁর স্বামীর পরিবার ১০ লাখ টাকা দাবি করে। চার চাকার গাড়ি কেনার জন্য তার বাবার কাছ থেকে ৪ লাখ টাকাও চাওয়া হয়। স্ত্রী যখন বলে যে তাঁর বাবার এই টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই, তখন তাঁর স্বামী তাঁকে মানসিক ও শারীরিকভাবে হয়রানি করে বলে অভিযোগ করা হয়।
এদিকে অভিযোগকারীর স্ত্রীর বক্তব্য শোনার পর উচ্চ আদালত পর্যবেক্ষণ করে যে স্ত্রীর এফআইআর-এ অস্পষ্টভাবে বলা আছে যে তাঁর সঙ্গে একজন দাসীর মতো আচরণ করা হয়েছিল। আদালত আরও বলে যে তিনি তাঁর কথিত মানসিক ও শারীরিক হয়রানির বিবরণ দেননি। এই পরিস্থিতিতে আদালত বলে, ‘শুধুমাত্র "মানসিক ও শারীরিকভাবে" হয়রানি শব্দের ব্যবহারেই ভারতীয় দণ্ডবিধি-র ৫৯৮-এ ধারায় মামলা করার জন্য যথেষ্ট নয়।’