রেলওয়ে আইনের অধীনে কোনও দুর্ঘটনায় মৃত রেলযাত্রীর বিবাহিত মেয়েও ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য। এমনই পর্যবেক্ষণ করল বম্বে হাই কোর্ট। সাধারণত, এই সব ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ এমন ব্যক্তিকে দেওয়া হয়ে থাকে যে মৃত ব্যক্তির উপর নির্ভরশীল। তবে উচ্চ আদালত জানিয়ে দিল, কোনও মৃত রেল যাত্রীর বিবাহিত মেয়ে যদি তাঁর উপর নির্ভরশীল নাও হন, তাও তাঁকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য রেল কর্তৃপক্ষ।
হাই কোর্টের বিচারপতি এমএল জওয়ালকর বলেন, ‘রেল আইনের ১২৩(বি)(i) ধারার সংজ্ঞা অনুযায়ী, নির্ভরশীল ব্যক্তিদের আওতায় পড়ে কন্যা। এই ক্ষেত্রে সেই কন্যা বিবাহিত কি অবিবাহিত, তা বলা হয়নি। তাই যে কোনও ক্ষত্রেই মৃত রেলযাত্রীর কন্যা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য।’ উল্লেখ্য, এই মামলার আবেদনকারী ছিলেন ৪৫ বছর বয়সি মীনা সাহারে। মহারাষ্ট্রের গোন্দিয়া জেলার এক দিনমজুর তিনি। তাঁর বাবা ২০১১ সালে রেল দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন। এর প্রেক্ষিতে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছিলেন মীনা। তবে ২০১৩ সালে তাঁর সেই দাবি নাকচ করে দেয় রেলওয়ে ক্লেইমস ট্রাইবুনাল। ট্রাইবুনালের যুক্তি ছিল, মীনা বিবাহিত। তাই মৃত বাবার উপর নির্ভরশীল নন তিনি। আর তাই তাঁকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য নয় রেল। তবে ট্রাইবুনালের সেই রায়কে খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
মীনার অভিযোগ, তাঁর বাবা ২০১১ সালে ট্রেনে যাওয়ার সময় ভিড়ের কারণে কামরা থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। এদিকে রেলের দাবি, মীনার বাবা টিকিট ছাড়া ভ্রমণ করছিলেন এবং নিজের অসাবধনতার কারণেই তিনি মারা যান। তাছাড়া রেল দাবি করে, মীনা যেহেতু বিবাহিত, তাই বাবার মৃত্যুতে তাঁকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায় না। তবে হাই কোর্ট জানিয়েছে, টিকিট না থাকার কারণে ক্ষতিপূরণের আবেদন খারিজ করা যায় না। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, যদি ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে কোনও ব্যক্তি মারা যান, তাহলে তাঁর কাছে টিকিট ছিল কি ছিল না, তা পরিবার কীভাবে প্রমাণ করবে? পাশাপাশি মৃত ব্যক্তির মেয়ে বিবাহিত কি অবিবাহিত, তা ক্ষতিপূরণ দেওযার ক্ষেত্রে বিবেচিত হবে না বলেও জানায় উচ্চ আদালত। এই আবহে আবেদনকারী মীনার দাবি অনুযায়ী, রেল কর্তৃপক্ষকে ৮ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিল হাই কোর্ট।