মুম্বইয়ের চেম্বুরের একটি কলেজে হিজাব এবং নিকাবের উপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখল বম্বে হাইকোর্ট। কলেজের ড্রেস কোড নিয়ে আপত্তি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ৯ জন মুসলিম ছাত্রী। বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি এস চান্দুরকার ও বিচারপতি রাজেশ পাতিলের ডিভিশন বেঞ্চ তাদের সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। চেম্বুর ট্রম্বে এডুকেশন সোসাইটির এনজি আচার্য এবং ডিকে মারাঠে কলেজ চলতি বছরের শুরুতে হিজাব, নিকাবের উপর বিধিনিষেধ চালু করেছিল। প্রতিষ্ঠানের সেই বিধিনিষেধের ওপর হস্তক্ষেপ করেনি হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: কর্ণাটক হল না বাংলা, হিজাবে আপত্তি জানিয়েও সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করল কলকাতার ল'
জানা যাচ্ছে, এতদিন প্রতিষ্ঠানে হিজাব, বোখা, নিকাবের উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিল না। তবে চলতি বছরের শুরুতে হঠাৎ করে নতুন ড্রেস কোড জারি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। তাতে জানানো হয়, বোরখা, নিকাব, হিজাব, বা কোনও ধর্মীয় শনাক্তকারী যেমন ব্যাজ, ক্যাপ বা স্টোল কলেজের ভিতরে পরা চলবে না। ছেলেদের জন্য শুধুমাত্র ফুল বা হাফ শার্ট এবং ট্রাউজার নির্ধারিত করা হয় নতুন ড্রেস কোডে। তারই প্রতিবাদ জানিয়ে কলেজের মুসলিম ছাত্রীরা প্রথমে মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে অভিযোগ জানান।
তাদের অভিযোগ ছিল, ১ মে কলেজের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে এই নির্দেশ জারি করা হয়। এর ফলে জীবন ও ধর্মের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। ক্লাসে যাওয়ার আগে তাদের হিজাব বা বোরখা খুলতে হচ্ছে। তবে সেখানে সমস্যার সমাধান না হওয়ায় বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ছাত্রীরা। তাদের পক্ষে আইনজীবী আলতাফ খান নিষেধাজ্ঞার সময় এবং যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
তাঁর যুক্তি ছিল, আবেদনকারীরা দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে এই পোশাক পরে কলেজে যাচ্ছেন। কিন্তু হঠাৎ করে এ বছরেই এই ড্রেস কোড চালু করা হয়েছে। কেন হঠাৎ করে এই বিধি নিষেধ চালু করা হল? তাইনিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন। তাঁর বক্তব্য, মুসলিম ছাত্রীদের টার্গেট করার জন্যই এই পোশাক বিধি চালু করা হয়েছে। তাছাড়া তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, যে পড়ুয়াদের শালীন পোশাক পরতে বলা হয়েছে। তাহলে কি হিজাব, নিকাব, বোরখা সেগুলি অশালীন পোশাক?
কলেজের যুক্তি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হল একটি ধর্মনিরপেক্ষ জায়গা। তাছাড়া, হিজাব বা নাকাব ইসলামের অপরিহার্য অঙ্গ নয়। তাই এই পোশাকে অনুমতি দেওয়া হয় নি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হল পড়াশোনার জায়গায় তাই পড়ুয়াদের শুধুমাত্র পড়াশোনাতেই মন দেওয়া উচিত ল। আইনজীবী আরও জানান, আগামী দিনে যদি কোনও ছাত্র ভাগওয়া পোশাক পরে কলেজে আসে তাহলে তাকেও বাধা দেবে কলেজ কর্তপক্ষ। শেষ পর্যন্ত কলেজের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করেনি হাইকোর্ট।