বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > চিতাবাঘের মুখে জন্মদিনের কেক ছুঁড়ে প্রাণ বাঁচালেন দুই ভাই!

চিতাবাঘের মুখে জন্মদিনের কেক ছুঁড়ে প্রাণ বাঁচালেন দুই ভাই!

ফাইল ছবি : এএনআই (ANI)

ভাই সাবিরকে বাইকে চাপিয়ে নেপানগর থেকে কেক আনতে গিয়েছিলেন গোরাগিয়া গ্রামের ফিরোজ। ২ পাউন্ডের বার্থডে কেক কিনে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যায়।

জন্মদিনে অনেকসময়ে মজা করে মুখে বার্থ ডে কেক মাখিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বার্থ ডে কেক যে নতুন জীবনও দান করতে পারে তা কি আপনার জানা ছিল? আজ্ঞে হ্যাঁ, চিতাবাঘের মুখে আস্ত বার্থডে কেক ছুঁড়ে কোনও মতে প্রাণ বাঁচালেন দুই ভাই।

ঘটনাটি মধ্যপ্রদেশের ভোপালের। ভাই সাবিরকে বাইকে চাপিয়ে নেপানগর থেকে কেক আনতে গিয়েছিলেন গোরাগিয়া গ্রামের ফিরোজ। ২ পাউন্ডের বার্থডে কেক কিনে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যায়।

গ্রামের রাস্তা। অন্ধকার হয়ে এসেছে। দুই পাশে মাঝে মাঝে জঙ্গল, আখের ক্ষেত। তার মধ্যেই যে বিপদ লুকিয়ে, কে জানত! গল্প করতে করতে দুজনে যাচ্ছিলেন। হঠাত্ই আখের ক্ষেতের মধ্যে থেকে বিশালাকার কী যেন একটা বেরিয়ে এল। ভয়ার্ত চোখে দুই ভাই দেখলেন, প্রকান্ড চিতাবাঘ!

তবে বাইকের গতি থাকায় একটুর জন্য চিতাবাঘটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। কোনও মতে ব্যালেন্স সামলে নেন ফিরোজ। কিন্তু তখনও হাল ছাড়েনি চিতাবাঘটি।

এদিকে ঘাবড়ে গিয়ে দ্রুত চালাতে শুরু করেন ফিরোজ। কিন্তু গ্রামের মেঠো পথ। কাদা। মাঝে আস্তে করতেই হল। আর এমন সময়েই আবার পিছু পিছু এসে গেল চিতাবাঘটি।

দুই ভাই জানান, এবার চিতাবাঘটি সরাসরি থাবা মারতে আসে। সেটি গিয়ে লাগে সাবিরের হাতে থাকা কেকের বাক্সে। কোনওমতে ভয়ের চোটে কেকটাই ছুঁড়ে দেন সাবির। এদিকে ক্রিম কেক বাক্স ছিঁড়ে গিয়ে লাগে বাঘের মুখে।

এমন কাণ্ডে ঘাবড়ে যায় চিতাবাঘটি। সেখান থেকে কেটে পড়ে সে। আখের ক্ষেতে গা ঢাকা দেয়।

এরপর বিনা কেকেই বাড়ি ফেরেন তাঁরা। বন দফতরে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।

বন দফতরের আধিকারিকদের কথায়, যে কোনও ধরনের বাঘ জাতীয় প্রাণী মানুষকে আক্রমণ করা এড়িয়ে চলে। কোনও কারণে অত্যন্ত অসুস্থ, আহত হলে তখন বাঘ আর জঙ্গলে দ্রুত হরিণ বা বন শূকর তাড়া করে ধরতে পারে না। তখন সে অপেক্ষাকৃত ধীর ও দূর্বল গবাদি পশু বা কখনও মানুষকে আক্রমণ করে।

যদিও এর আরও কারণ রয়েছে। মাইলের পর মাইল জঙ্গল কেটে আখের ক্ষেত হিসাবে দখল করা হচ্ছে। ফলে ওদের বাসস্থানও হারিয়ে যাচ্ছে। এই কারণে বাঘ-মানুষ আরও বেশি মুখোমুখি হচ্ছে।

জঙ্গলে হরিণ, বনশূকর ইত্যাদি প্রাণী অত্যন্ত্য দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে। এদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বাঘের গুরুত্ব অপরিসীম। নয় তো হরিণজাতীয় তৃণভোজী প্রাণীর সংখ্যা অত্যন্ত বেড়ে যাবে ও তাদের মধ্যে খাদ্যের অভাব দেখা দেবে। প্রকৃতির ভারসাম্য বিনষ্ট হবে।

ফলে, এ যাত্রায় বাঘের ফলে মানুষের বিপদ হলেও, আখেরে মানুষই বাঘের জন্য বেশি বিপদজনক।

বন্ধ করুন