কোভিড আবহের মাঝে চিনে এবার হানা দিল ব্যাক্টেরিয়াজাত রোগ ব্রুসেলোসিস। খাদ্য ও নিঃশ্বাসের মাধ্যমে এই জীবাণু মানবশরীরের প্রবেশ করেছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।
উত্তর-পশ্চিম চিনের ল্যানঝৌ শহরে কয়েক হাজার মানুষ এই জীবাণুতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে আঞ্চলিক প্রশাসন।
২০১৯ সালে এক বায়োফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থার কারখানা থেকে এই জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে। চিনের গ্যানসু প্রদেশের ল্যানঝৌ পশুরোগ গবেষণা কেন্দ্র এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ওই অঞ্চলে ব্রুসেলোসিস অতিমারী রুখতে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, গবাদি পশুর থেকেই এই রোগের ব্যক্টেরিয়া সংক্রমণ ঘটে প্রতিপালক মানুষের শরীরে।
ল্যানঝৌ গবেষণা কেন্দ্র প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ২১,৮৪৭ জনের নমুনা পরীক্ষার পরে ৪,৬৪৬ জন পজিটিভ এবং ৩,২৪৫ জন সংক্রমিত রোগীর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। এর জেরে ৩,১৫৯টি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ফাইল তৈরি হয়েছে, চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে ২৩,৪৭৯ বার এবং ঘটনাস্থলে রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা সংক্রান্ত ভাষণ দেওয়া হয়েছে ৯টি স্বাস্থ্য শিবিরে।
গবেষক দলের রিপোর্ট অনুযায়ী, ল্যানঝৌ বায়োফার্মাসিউটিক্যাল ফ্যাক্টরি থেকে গ্যাস লিক করার ফলে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে। ওই কারখানায় ব্রুসোলিস রোগের টিকাও উৎপাদন করা হয় বলে জানা গিয়েছে। ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই থেকে ২০ অগস্টের মধ্যে মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া টিকা থেকে নতুন ব্রুসেলা ভ্যাক্সিন তৈরির প্রক্রিয়ায় বর্জ্য গ্যাসের অসম্পূর্ণ জীবাণুমুক্তিকরণের জেরে গাঁজানোর জন্য ব্যবহৃত ট্যাঙ্ক থেকে বের হওয়া তরলকণার সুবাদেই বিপত্তি ঘটে।
গবেষক দলের রিপোর্ট অনুযায়ী, ল্যানঝৌ বায়োফার্মাসিউটিক্যাল ফ্যাক্টরি থেকে গ্যাস লিক করার ফলে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে। ওই কারখানায় ব্রুসোলিস রোগের টিকাও উৎপাদন করা হয় বলে জানা গিয়েছে। ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই থেকে ২০ অগস্টের মধ্যে মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া টিকা থেকে নতুন ব্রুসেলা ভ্যাক্সিন তৈরির প্রক্রিয়ায় বর্জ্য গ্যাসের অসম্পূর্ণ জীবাণুমুক্তিকরণের জেরে গাঁজানোর ট্যাঙ্ক থেকে বের হওয়া তরলকণার সুবাদেই বিপত্তি ঘটে।
গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, ট্যাঙ্ক থেকে লিক হওয়া জীবাণু সংক্রমিত তরলের কণা বায়ুবাহিত হয়ে মানুষের দেহে ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ ঘটায়।
আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) জানিয়েছে, ব্রুসেলা ব্যাক্টেরিয়ার সংস্পর্শে মাল্টা ফিভার বা মেডিটেরেনিয়ান ফিভার নামে এক রকম জ্বরের প্রকোপ দেখা দেয়। এই রোগের প্রধান উপসর্গ মাথাব্যথা, পেশির যন্ত্রণা, প্রবল জ্বর ও ক্লান্তি ভাব। সিডিসি-র মতে, উপসর্গের উপশম হলেও রোগের জেরে শরীরে স্থায়ী আর্থ্রাইটিস ও বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফুলে উঠতে পারে।
আশির দশকে চিনে ব্রুসেলা অতিমারী দেখা দেওয়ার পরে টিকা আবিষ্কার ও প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের সুবাদে রোগের প্রকোপ কমে যায়। তবে তা সত্ত্বেও গত কয়েক দশকে বিক্ষিপ্ত সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে।