মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের সমাধি অপসারণের দাবি নিয়ে মহারাষ্ট্রজুড়ে বিতর্ক চলছে। এই আবহে ঔরঙ্গজেবের সমাধি অপসারণের পরিবর্তে ওই অঞ্চলে মারাঠা যোদ্ধা ছত্রপতি সম্ভাজি মহারাজের স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস আঠাওয়ালে। গত সপ্তাহে নাগপুরে ঔরঙ্গজেব ইস্যুতে ছড়িয়ে পড়েছিল হিংসা। যার জেরে এক ডজন পুলিশকর্মী ও সাধারণ মানুষ আহত হয়েছিলেন। সেই হিংসার সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা বিপুল সংখ্যক যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়েছি।
আরও পড়ুন-Mumbai Fire: আগুনের গ্রাসে মুম্বইয়ের আবাসন, অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু নিরাপত্তারক্ষীর
উত্তরাখণ্ডে এক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ছত্রপতি সম্ভাজিনগরে থেকে মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের সমাধি অপসারণ করলে কোনও সমাধান হবে না। তাঁর সমাধি সরিয়ে উচিত হবে না। তবে সম্ভাজিনগরে ছত্রপতি সম্ভাজি মহারাজের বড় স্মৃতিস্তম্ভ থাকা উচিত।' তিনি আরও বলেন, 'ঔরঙ্গজেবের সমাধি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আওতাধীন এবং সুরক্ষা বলয়ে রয়েছে। আমাদের সম্ভাজি মহারাজের আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তবে দেশে শান্তি থাকা উচিত।' একই সঙ্গে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে সম্রাট ঔরঙ্গজেবের আদর্শের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত না করার আহ্বান জানিয়েছেন রামদাস আঠাওয়ালে। তিনি বলেন, 'সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাছে আমার অনুরোধ, তোমরা ঔরঙ্গজেবের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করো না। এই অঞ্চলের সংখ্যালঘুরা আগে হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত ছিল। এখানকার বাসিন্দারা মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের সন্তান নয়। তাদের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই।
পাশাপাশি উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করে রামদাস আঠাওয়ালে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামির সোজা পথে চলেন। তাই তিনি এই রাজ্যের ক্ষমতায় টানা ৩ বছর ধরে রয়েছেন। পুষ্কর তাঁর বন্ধুও। যখনই তিনি উত্তরাখণ্ডে আসেন, মুখ্যমন্ত্রী ধামির সঙ্গে দেখা করেন। এবং অনেক সময় তিনি যখন দিল্লিতে আসেন, তখন মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
আরও পড়ুন-Mumbai Fire: আগুনের গ্রাসে মুম্বইয়ের আবাসন, অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু নিরাপত্তারক্ষীর
উল্লেখ্য, ১৭৭০ সালে মৃত্যু হয়েছিল মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের। এই ব্যক্তিত্বকে কেন্দ্র করে মহারাষ্ট্রে দীর্ঘ বিতর্কের ইতিহাস আছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে মারাঠা রাজা ছত্রপতি সম্ভাজির জীবন আলেখ্যে ‘ছবা’ নামে একটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে বলিউডে। এই সিনেমায় ঔরঙ্গজেব কী ভাবে তাঁকে যারপরনাই অত্যাচার করে মেরেছিলেন, তা তুলে ধরা হয়েছে। তারপর থেকে ঔরঙ্গজেবকে নিয়ে ফের নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বিক্ষোভ চলাকালে এই সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল। এলাকার স্থানীয়দের অনেকে সেই বিক্ষোভ সমাবেশের সামনে চলে এসেছিলেন সেদিন। একটি গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বিক্ষোভ চলাকালীন একটি কাপড় পোড়ানো হয়েছিল, যেখানে কুরআনের আয়াত লেখা ছিল। এই গুজবের কারণে ঔরঙ্গজেবের বিরোধী সমাবেশের ওপর হামলা হয়েছিল।