কয়েকদিন আগেই বুল্লিবাই কেস নিয়ে কার্যত ঝড় বয়ে গিয়েছে গোটা দেশে। অ্যাপের মাধ্যমে মহিলাদের নিয়ে কু ইঙ্গিত ও অশ্লীল বার্তা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। উল্লেখ্য, এই অ্যাপে, এক বিশেষ সম্প্রদায়কে টার্গেট করার অভিযোগও ওঠে। প্রসঙ্গত, অ্যাপ নিয়ে তদন্তে নেমে মুম্বই পুলিশ দেখতে পায় একটি বিশেষ ট্রেন্ড। অ্যাপের প্রতিটি পোস্টে শিখ সম্প্রদায়ের নাম নেওয়া হয়। এই বিষয়ে সোমবার আদালতকে মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে যে, মুসলিম ও শিখ সম্প্রদায়ের মধ্যে মনোমালিন্যের জন্ম দিতেই এভাবে শিখ সম্প্রদায়ের নাম নেয় অ্যাপটি। অন্যদিকে অ্যাপের মাধ্যমে টার্গেট করা হয় মুসলিম মহিলাদের।
বুল্লিবাই অ্যাপকাণ্ডে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে মূল হোথা বিশাল ঝা। বেঙ্গালুরু থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এছাড়াও অ্যাপের তদন্তের সূত্র ধরে উত্তরাখণ্ডেও পা রাখে মুম্বই পুলিশের একটি দল। সেখান থেকে শ্বেতা সিং ও মায়াঙ্ক রাওয়াতকে এই ঘটনার জেরে গ্রেফতার করা হয়। মুম্বই পুলিশ জানতে পারে যে, শ্বেতা ও বিশাল যে ধরনের পোস্ট করতে থাকে, তাতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভঙ্গ হতে পারত এই বুল্লি বাই অ্যাপের হাত ধরে। এমনই মনে করছে মুম্বই পুলিশ। এদিন আদালতকে মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, জেনে বুঝে শিখ সম্প্রদায়ের নাম নিয়ে বুল্লি বাইয়ের পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় করা হত। যাতে মুসলিম সমাজ ও শিখ সমাজের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। মুম্বই পুলিশ নিজে র হলফনামায় জানিয়েছে, 'এটি করা হয়েছিল দুই ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা ও বিরোধ সৃষ্টি করার জন্য যা সমাজে শান্তি ভঙ্গ করতে পারে।' আদালতকে পুলিশ এও জানিয়েছে যে বিশাল, মায়াঙ্ক , শ্বেতারা এই অ্যাপ মামলায় অপর জড়িত নীরজ বিষ্ণোইকেও চেনে বলে জানিয়েছে। যে নীরজ আপাতত গ্রেফতার হয়েছে দিল্লি পুলিশের হাতে।
পুলিশি হলফনামায় এদিন তুলে ধরা হয়, কীভাবে অভিযুক্তরা বিভিন্ন পন্থায় নিজেদের লোকেশন গোপনে রাখে। এমনকি নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের লোকেশন বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় রাখে তারা। ফলে সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলটি খুললে মনে হতে পারে যে, বিদেশে বসে কেউ সেই প্রোফাইলে লগ ইন করেছে। এইভাবে নিজেদের পরিচিতিও তারা গোপন রাখার চেষ্টা চালিয়েছে বলে জানা যায়। পুলিশ জানিয়েছে, এই কীর্তি চালানোর জন্য অভিযুক্তরা কোথা থেকে টাকা পাচ্ছিল, তা জানতে তাদের ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টও ঘেঁটে দেখা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ওপেন সোর্স প্ল্যাটফর্ম গিটহাব থেকে কার্যকর করা হয় বুল্লিবাইকে। অ্যাপে মহিলাদের নিলাম করার জন্য আহ্বান জানানো হত গ্রাহকদের। দেওয়া হত মহিলাদের বিস্তারিত বিবরণ। মুম্বই পুলিশের সাইবার সেলে এই ইস্যুতে মামলা দায়ের হয় ১ জানুয়ারি। তারপর থেকেই তদন্তে নামে মুম্বই পুলিশ।